সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: একাদশীর সকালেই দক্ষিণবঙ্গে অশনি সংকেত। কোথাও ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি, আবার কোথাও ঝিরঝিরে। আর এই বৃষ্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা। জানা যাচ্ছে, দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন জল ছাড়ার (DVC Water Release) সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুর্গাপুজোর আগে লাগাতার বৃষ্টি আর জলাধার থেকে জল ছাড়ায় দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হওয়ার যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তা এবার বাস্তবে রূপ নেওয়ার পালা।
ঝাড়খণ্ড থেকেই বাংলায় জলস্রোত
প্রসঙ্গত, এখনও ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টির দাপট থামেনি। সেখানকার মাইথন, পাঞ্চেত, তেনুঘাট সহ একাধিক জলাধার থেকে জল ছাড়া হচ্ছে। এই সময়ের রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৮ টার মধ্যে মাইথন থেকে ৪২,৫০০ কিউসেক, পাঞ্চেত থেকে ২৭,৫০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। আর একই সময় দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ৫৯,০৭৫ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। পাশাপাশি আরও দুটি সেচ খালের মধ্য দিয়ে যথাক্রমে ১৫০০ কিউসেক এবং ৫০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ফলে পুজোর পরেই যে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
এদিকে দুর্গাপুর হেড ওয়ার্কর্সের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় মজুমদার জানিয়েছেন, ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টির তাণ্ডব বন্ধ হচ্ছে না। ফলে সেখানকার জলাধার থেকেই বাধ্য হয়ে জল ছাড়তে হচ্ছে। আর একই সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গেও চলছে টানা বৃষ্টি। দামোদরের জলস্তর ছাপিয়ে অবস্থা খারাপ। তাই বাধ্য হয়েই আমরা দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছেড়েছি।
আরও পড়ুনঃ ৬ না ৭ অক্টোবর কবে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো? জেনে নিন কখন শুরু পূর্ণিমা তিথি
কোন কোন জেলায় পড়বে প্রভাব?
এদিকে ডিভিসি থেকে এই জল ছাড়া মানেই আতঙ্কে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি। তালিকায় রয়েছে পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি, হাওড়া, বাঁকুড়া। পাশাপাশি উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও পড়তে পারে প্রভাব। আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে, একাদশীর দিন দুই মেদিনীপুর জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি দুই বর্ধমান এবং বাঁকুড়াতেও বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। ফলত, জলাধার থেকে অতিরিক্ত জল ছেড়ে দেওয়ায় এই জেলাগুলি যে ফের প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, তা বোঝাই যাচ্ছে।