প্রীতি পোদ্দার, স্বরূপনগর: গ্রামে হোক বা শহরে সীমান্তরক্ষীদের নানা ঘটনার কথা খবরের শিরোনামে বার বার উঠে আসে। সম্প্রতি আরও একবার প্রকাশ্যে এল সীমান্তরক্ষীদের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর অভিযোগ। জানা গিয়েছে নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে জমির ফসল নির্বিচারে কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিএসএফ জওয়ানদের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি কী?
সূত্রের খবর, ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর ব্লকের বালতি নিত্যানন্দকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের আমুদিয়া সীমান্তে। সেখানকার আমুদিয়া অঞ্চলের কৃষকরা জানিয়েছেন, তাদের জমিতে ধানসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তারা। আলু, পটিল, ঝিঙে সমস্ত ধরনের সবজি বহু কষ্ট করে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে চাষ করেন। কিন্তু সীমান্তের বিএসএফ-রা, রাতের অন্ধকারে জমির একাংশে ধানসহ বিভিন্ন ফসল নির্বিচারে কেটে নিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে বেশ ক্ষুব্ধ কৃষকরা। তাই তাঁরা এই অভিযোগ নিয়ে সরাসরি ১৪৩ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসারের কাছে যান।
কিন্তু এই প্রসঙ্গে পাল্টা অফিসারেরা জানান, সীমান্তের নিরাপত্তার স্বার্থে বিএসএফ এই ফসল কেটে দিয়েছে। তাতে বরফ গলে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসারের করা এই মন্তব্য সীমান্তের কৃষকরা একদমই মানতে নারাজ। তাদের অভিযোগ, এ অঞ্চলের প্রায় ৫০০০ কৃষক বিভিন্ন মরশুমি ফসল চাষ করে সারা বছরের আয় উপার্জন করেন। আর এই আয় দিয়ে একদিকে যেমন তাঁরা সংসার চালান ঠিক তেমনই সন্তানদের পড়াশোনা এবং অন্যান্য দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ করে। তাই চাষবাসকেই তাঁরা ভগবানের চোখে দেখে থাকেন। তাই এই ধরনের বড় সংকট তৈরি হওয়ায় বেশ চিন্তায় পড়ে যান তাঁরা।
গণ স্বাক্ষর নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে বড় অভিযোগ
শেষ পর্যন্ত কোনো আশার আলো না দেখতে পেয়ে এই জটিল সমস্যা সমাধানের জন্য গ্রামবাসীরা তাই বাধ্য হয়ে সকলের থেকে গণ স্বাক্ষর করে অভিযোগপত্রটি বালতি নিত্যানন্দকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সাবিকুন নাহার কাছে জানানো হয়। সাবিকুন নাহা জানান যে “পঞ্চায়েতের তরফ থেকে একদিকে বিএসএফদের সঙ্গে এবং অন্যদিকে স্বরূপনগর থানায় পুরো বিষয়টা জানাব। এমনকি স্বরূপনগর বিডিওকে লিখিতভাবে এই ঘটনা জানাব।” তবে শুধু যে ফসল কাটার অভিযোগ সীমান্তরক্ষী বাহিনীদের বিরুদ্ধে রয়েছে তা নয়। তার সঙ্গে মাঠের মধ্যে চাষীদের বিভিন্নভাবে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ করে গ্রামবাসীদের একাংশ। তবে এইমুহুর্তে সীমান্তরক্ষী বাহিনীদের তরফ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।