সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দুর্গাপুরের ঘটনার মধ্যেই বসিরহাটে (Basirhat) ঘটে গেল আরও এক ধর্ষণের ঘটনা। জানা যাচ্ছে, ফেসবুকে রিলস বানানোর নাম করেই পুলিশকর্মীর মেয়ে নাবালিকা এক ছাত্রীর অশ্লীল নোংরা ভিডিও তৈরি করে ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছে। এমনকি তারপরই ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে। এর জেরেই গ্রেফতার হয়েছে ইউটিউবার এবং তাঁর ১৭ বছরের ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার হাড়োয়া থানা এলাকায়।
ঘটনাটি কী?
স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, নির্যাতিতা একজন নবম শ্রেণীর ছাত্রী, যার বয়স ১৫। মূলত নাচ-গান পছন্দ করত সে। তার বাড়ির পাশেই থাকত এক ইউটিউবার। তবে রিলস বানিয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে অভিযুক্ত এবং তাঁর ছেলে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। পাশাপাশি মাথায় সিঁদুর পরিয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েই ধর্ষণ করা হয়। খবর ছড়িয়ে পড়তেই হাড়োয়া থানার পুলিশ পক্সো আইনে তাদের গ্রেফতার করেছে।
স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী খবর, ওই ইউটিউবারের নাম অরবিন্দ মন্ডল, যার সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৪৫ লক্ষ। তিনি মূলত নাচ,গান, রিলস বানায়। সেই সূত্র ধরে একই এলাকায় বাড়িতে থাকায় ওই নাবালিকা ছাত্রীর সঙ্গে তার পরিচয়। সেই সুযোগ নিয়েই তিনি এবং তার ছেলে এরকম কুকীর্তি ঘটায়।
নির্যাতিতার আইনজীবী কালীদাস মন্ডল বলছেন, মেয়েটির মা বলেছেন যে, মেয়ে নাচে পারদর্শী ছিল। আর ওর বাড়ির পাশেই থাকত ইউটিউবার। ওরাই ওকে নাচ শেখাতে নিয়ে যেত। পরে অশ্লীল ভিডিও বানাতে শুরু করে ওরা। এরপর মেয়েটিকে বাড়িতে একা পেয়ে ইউটিউবার ধর্ষণ করে। পরে ছেলে এবং তার মা বাড়িতে ফিরলে মেয়েটি সব জানায়। এরপর ইউটিউবারের ছেলে “তোমায় বিয়ে করব” বলে মাথায় সিঁদুর পরিয়ে দেয়। এরপর ওর ঘরে নিয়ে গিয়ে বলে যে মেয়েটি এখন থেকে ওর স্ত্রী। এরপর আবারও তাকে ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষিত হয়েই নির্যাতিতা তার মাকে ব্যাপারটা জানায়।
এ বিষয়ে নির্যাতিতার মাও মুখ খুলেছে। তিনি বলেছেন, আমার মেয়েকে রিলস বানিয়ে দেওয়ার নাম করে অশ্লীল নোংরা ভিডিও তুলে ওরা মোবাইলে রাখে। এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে ভয় দেখানো হত। থ্রেড দেওয়া হত যে, কাউকে বললেই এই ভিডিও ছেড়ে দেব। এমনকি ক্রমাগত ব্ল্যাকমেইল করতে থাকত তারা। পরে একদিন ইউটিউবার জোর করে ওর মাথায় সিঁদুর তুলে দেয়। আর তারপরেই ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। আমি দোষীদের শাস্তি চাই।
আরও পড়ুনঃ নাগরাকাটায় মৃতদের পরিবারের সদস্যের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিলেন মমতা
ইতিমধ্যেই ওই ইউটিউবারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে বসিরহাট জেলার পুলিশ সুপার হোসেন মেহেদী রহমান বলেছেন, পক্সো ধারায় মোট চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত ইউটিউবার এবং তার ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি দু’জন পলাতক। তাদের ধরতে সমস্ত রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। নির্যাতিতার মেডিকেল টেস্ট ইতিমধ্যেই করানো হয়েছে। আর ধৃত দু’জনকে রবিবার দুপুরে বসিরহাট আদালতে পেশ করা হয়েছে। বর্তমানে তদন্ত চলছে।