প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম যেন দিন কে দিন আকাশছোঁয়া হয়ে পড়ছে। সামান্য ভাত ডাল খেতে গেলেও মাথা চাপড়াতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের। তার উপর প্রত্যেক বছরই পেঁয়াজের দামের (Onion Price) চোখ রাঙানিতেই চোখে জল গড়িয়ে পড়ছে মধ্যবিত্তের চোখে। তাই এবার সাধারণ মানুষকে এই ভয়ংকর কাটাতে এবার পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার। যাতে কম দামে সারাবছর বাংলার মানুষ পেঁয়াজ খেতে পারেন তার জন্য পদক্ষেপ করল কৃষি বিপণন দফতর।
পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার নির্মাণ রাজ্যে
সম্প্রতি রাজ্যে নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। যেহেতু শীতকালীন আবহাওয়া এবার বেশ অনুকূল ছিল তাই রাজ্যে পেঁয়াজ চাষ বেশ ভালো হয়েছে। সম্প্রতি উদ্যানপালন দপ্তরের মন্ত্রী অরূপ রায় জানিয়েছেন যে এবার রাজ্যে পেঁয়াজের উৎপাদন হবে ৭ লক্ষ টন। গত বছর যেখানে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছিল সাড়ে ৬ লক্ষ টন। সেই তুলনায় এত ভালো উৎপাদন সকলকে চমকে দিয়েছে। আর এই আবহেই এবার পেঁয়াজ সংরক্ষণের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। আসলে, রাজ্যে এতদিন বেসরকারি মালিকানায় পেঁয়াজ সংরক্ষণের জায়গা নির্মাণের জন্য রাজ্য সরকার ভর্তুকি দিত। কিন্তু এবার আর রাজ্যকে ভর্তুকি দিতে হবে না। কারণ এবার বিভিন্ন জেলায় বড় ও ছোট মাপের পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার (First Onion Conservation In WB) তৈরি করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, শনিবার নবান্নে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের একটি বৈঠকের আয়োজন করেছিল। আর সেই বৈঠকে উঠে আসে পেঁয়াজ সংরক্ষণের প্রসঙ্গ। তাতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে এখন থেকে ছোট ও মাঝারি চাষিদের পেঁয়াজ রাখার সুযোগ দেওয়া হবে এখানে। আর তা পর্যালোচনা করবে প্রত্যেক জেলাশাসক। জানা গিয়েছে আগামী ১৫ মার্চ থেকে যাতে পেঁয়াজ রাখা যায় তার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। এইমুহুর্তে ৪০ টন পেঁয়াজ রাখার জন্য রাজ্যে ৮টি বড় সংরক্ষণাগার নির্মাণ করা হয়েছে পাঁচটি জেলায়। সেগুলি হল পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী ও কালনা, হুগলির বলাগড় ও আদিসপ্তগ্রাম, মুর্শিদবাদের নওয়াদা ও সাগরদিঘি, নদীয়ার হাঁসখালি এবং মালদহের গাজোল। গাজোলের সংরক্ষণাগারটি ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসের মধ্যে এগুলি চালু হয়ে যাবে।
আর পড়ুনঃ ৮০% অবধি টোল ট্যাক্স কমানোর নির্দেশ NHAI-কে! নজিরবিহীন রায় হাইকোর্টের
কবে কাজ শেষ হবে ছোট সংরক্ষনাগারগুলির?
অন্যদিকে রাজ্যে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য ছোট সংরক্ষণাগার নির্মাণ করা হচ্ছে ৯১৭টি। তার মধ্যে ৮৪৯টি তৈরির কাজ শেষ।এই প্রত্যেকটি সংরক্ষনাগার প্রতিটিতে ৯ টন করে পণ্য রাখা যাবে। যে সকল জেলায় ছোট সংরক্ষনাগার নির্মাণ করা হয়েছে সেই জেলাগুলি হল—দুই ২৪ পরগনা, নদীয়া, মুর্শিদবাদ, মালদহ, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম ও বাঁকুড়া। আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ব্যাপারে উত্তর ২৪ পরগনা, বীরভূম ও পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসককে বিশেষ নজরদারি করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যার ফলে কয়েকদিনের মধ্যে রাজ্যের পেঁয়াজও কলকাতার খুচরো বাজারে বেশি পরিমাণে মিলবে। তখন সবধরনেরই পেঁয়াজের দাম কমবে।