বাংলায় এও সম্ভব! জুনপুটে DRDO-র ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জায়গায় শুকোচ্ছে শুঁটকি

Published on:

junput drdo launching pad

শ্বেতা মিত্র, পূর্ব মেদিনীপুরঃ আচ্ছা কখনো কি আপনি শুনেছেন বা দেখেছেন যে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জায়গায় শুঁটকি মাছ শুকোচ্ছে? শুনে চমকে গেলেন তো? কিন্তু এটাই দিনের আলোর মতো সত্যি। আসলে জুনপুটে (Junput) গেলে আপনি এমনই দৃশ্য দেখতে পারবেন বর্তমানে। জুনপুটে ডিআরডিও-র লঞ্চিং প্যাডের অবস্থা রীতিমতো শোচনীয় হয়ে পড়েছে। এখানে এখন যা দৃশ্য দেখা যাচ্ছে সেটা হয়তো কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। কোথায় লঞ্চিং প্যাড? এ তো শুঁটকির আড়ৎ! হ্যাঁ এখন এমনই বেহাল দশা হয়ে রয়েছে DRDO-র তরফে তৈরী করা সাধের এই জায়গার।

ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জায়গায় শুকোচ্ছে শুঁটকি মাছ!

WhatsApp Community Join Now

জানা গিয়েছে, এই জায়গায় পরপর তিনবার বাতিল হয়েছে পরীক্ষামূলক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ। স্থানীয়দের আপত্তিতে সীমানা প্রাচীরের কাজও শুরু হয়নি বলে দাবি ডিআরডিও-র। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। বর্তমানে এই জায়গা নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করেছেন স্থানীয় মৎস্যজীবীরা। ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জায়গা মানেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে বড় বড় টাওয়ার, বিভিন্ন অস্ত্র, মিসাইল, কিন্তু জুনপুটে অন্য দৃশ্য। অস্ত্রশস্ত্র, মিসাইলের জায়গায় সেখানে রয়েছে শুঁটকি মাছ, একের পর এক মাছ ধরার জাল। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। আর এহেন দৃশ্য মাথা ঘুরে যাবে আপনারও।

গত মার্চে পরীক্ষামূলক ভাবে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের কথা থাকলেও তা হয়নি। জুলাইয়েও দু’দফায় ঘোষণার পরে পরীক্ষামূলক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ বাতিল হয়। তবে বেশ কিছু দিন আগেই সেখানে তৈরি হয়েছে ‘লঞ্চিং প্যাড’। সেখানেই চলছে মাছ শুকানো। একজন তো সাফ সাফ জানিয়েই দিলেন, ‘জায়গাটা ফাঁকা পড়ে রয়েছে। তাই মাছ শুকোচ্ছি।’

কী বলছেন স্থানীয়রা?

এই বিষয়ে স্থানীয় বিধায়ক তথা বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরূপ দাসের দাবি, ‘প্রথমে স্থানীয়দের উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। তারা সাময়িক ব্যবহারের পরে এত দিন যারা প্রকল্পে বাধা দিচ্ছিল, তারাই ওই জমি দখলের পরিকল্পনা করেছে। আমরা ডিআরডিও-কে সবটা জানাচ্ছি।’ অন্যদিকে পূর্ব মেদিনীপুর মৎস্যজীবী ফোরামের সম্পাদক দেবাশিস শ্যামলের পাল্টা বক্তব্য, ‘যে জায়গায় লঞ্চিং প্যাড হয়েছে, সেখানে দীর্ঘ দিন ধরে মৎস্যজীবীরা মাছ শুকানোর কাজ করতেন। ওই জমি ডিআরডিও-কে দেওয়ার আগে মৎস্যজীবীদের সঙ্গে আলোচনাও করা হয়নি।’

জুনপুট নিয়ে বড় প্ল্যান DRDO- র

এমনিতে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) পশ্চিমবঙ্গের জুনপুটের মতোন জায়গায় দেশের অস্ত্র ব্যবস্থার জন্য একটি ছোট পরীক্ষা কেন্দ্র নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।  ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জের (আইটিআর) জন্য পরিচিত ওড়িশার চাঁদিপুরের মতো জুনপুটও বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত।

জুনপুট কলকাতা থেকে ১৭৭ কিলোমিটার এবং জনপ্রিয় সমুদ্র রিসর্ট শহর দিঘা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, শুরু থেকেই ডিআরডিও স্থল, আকাশ, সমুদ্র, মহাকাশ এবং সাইবার প্রতিরক্ষা ও সুরক্ষার ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক সেন্সর, অস্ত্র ব্যবস্থা, প্ল্যাটফর্ম এবং সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামগুলির নকশা ও বিকাশের লক্ষ্য নিয়েছে।

সঙ্গে থাকুন ➥