প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত প্রায় দু’বছর ধরে আবাস যোজনা (Pradhan Mantri Awas Yojana) প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে শুধু আবাস নয়, পাশাপাশি একশো দিনের কাজ থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে আয়ুষ্মান যোজনার ক্ষেত্রেও কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের জন্য বরাদ্দ টাকা নিয়ে বারবার সরব হয়েছে তৃণমূল। একাধিকবার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের জন্য বরাদ্দ আবাস যোজনা প্রকল্পের টাকা দেয়নি রাজ্যকে। তাই এবার সেই কাজের ভার একাই নিজের কাঁধে তুলে নিল সরকার। চলতি মাসেই এবার উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকবে টাকা।
৬,৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার
নবান্ন সূত্রে আগেই জানানো হয়েছিল যে ডিসেম্বর থেকে আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হবে। আর এবার সেই কথা মতই কাজ করতে শুরু করল রাজ্য সরকার। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে প্রথম দফায় প্রায় ৬,৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার। আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে সেই টাকা ঢুকতে চলেছে। নবান্ন সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে ১১ লাখ উপভোক্তাকে আবাস যোজনার প্রথম কিস্তিতে টাকা দেওয়া হবে। অর্থাৎ আগামীকাল থেকে সকল উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৬০,০০০ টাকা জমা পড়বে। এরপর বাড়ির কাজ শুরু হলে মিলবে আরও ৬০,০০০ টাকা। অর্থাৎ দুটি কিস্তি মিলিয়ে প্রত্যেক উপভোক্তাদের রাজ্য সরকার মোট ১.২ লাখ টাকা দেবে।
নয় দফার নির্দেশিকা জারি রাজ্যের
এছাড়াও আবাস যোজনার টাকা নিয়ে যাতে কোনো আধিকারিক, নেতা, নেত্রী দুর্নীতিমূলক কাজ করতে না পারে, তার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। রাজ্যে ট্যাব কাণ্ডের পর যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করেছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই নয় দফার নির্দেশিকা জারি করেছেন রাজ্যের পঞ্চায়েত সচিব পি উলগানাথন। সকল জেলা প্রশাসনের কাছে সেই নয় দফার নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। তাতে স্পষ্টভাবে পাশপাশি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে ব্লক বা পঞ্চায়েতের জন্য যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে, সেটা যাতে অন্যত্র না চলে যায়, তা নিশ্চিত করা।
এছাড়াও আবাস যোজনার উপভোক্তদের প্রাথমিকভাবে নবান্ন থেকে কয়েকজনের হাতে শংসাপত্র তুলে দেবেন বলে ঠিক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেজন্য প্রতিটি জেলা থেকে দু’জন উপভোক্তাকে বাছাই করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপর বাকি উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা জমা পড়বে। এছাড়াও পঞ্চায়েত দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, প্রথম কিস্তির টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া যাতে মসৃণভাবে হয়, সেজন্য প্রতিটি ব্লকে দায়িত্ব দিতে হবে একজন সরকারি আধিকারিককে। এবং পোর্টালে তোলা হবে উপভোক্তাদের প্রদান করা অভিন্ন নম্বর। অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকলে উপভোক্তাদের ফোনে মেসেজ চলে যাবে বলে রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে।