প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: পুজোর আগে ফের দেখা গেল গঙ্গার রুদ্ররূপ! মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের পর এবার গঙ্গার ভয়াল ভাঙন ধেয়ে এল হুগলির শ্রীরামপুরে (Serampore)। গঙ্গার ধার বরাবর একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় ফাটল দেখা গেল স্পষ্ট। ভয়ংকর বিপদের মুখে শ্রীরামপুরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড। চলতি বছরে অতি বৃষ্টির জেরে সেই আশঙ্কা আরও প্রবল হয়ে উঠেছে বলে বিস্ফোরক দাবি নেহেরু নগর কলোনির বাসিন্দাদের।
ঠিক কী ঘটেছে?
রিপোর্ট অনুযায়ী শ্রীরামপুরের সিদ্ধেশ্বরীতলা থেকে মাহেশ পর্যন্ত গঙ্গার ধারে ভাঙনের ইঙ্গিত মিলছিল অনেক আগেই। কিন্তু চলতি বছরের অতিবৃষ্টির ফলে সেই আশঙ্কা বাস্তব রূপ নিয়েছে। গঙ্গার ধার ধরে চাপ বাড়তে বাড়তেই তৈরি হল এক ভয়াবহ পরিস্থিতি। নেহেরুনগর কলোনিতে গঙ্গার ধার ভেঙে পড়ায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। গঙ্গার প্রবল স্রোতে রাস্তার একাংশ বসে গিয়েছে গঙ্গার দিকে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, যেকোনো মুহূর্তে সম্পূর্ণ ধসে যেতে পারে সেই রাস্তা। এরপরই গঙ্গার জল হুড়মুড়িয়ে ঢুকবে পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে। বাড়বে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।
কী বলছেন কাউন্সিলর সন্তোষ সিং?
রাস্তা ভাঙনের প্রসঙ্গে নেহেরুনগরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, “এভাবে চলতে থাকলে অনেক বাড়িঘর, জমি, দোকান—সব কিছুই নদীগর্ভে চলে যাবে। সময় থাকতে ব্যবস্থা না নিলে সর্বনাশ আটকানো যাবে না।” প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে অবিলম্বে কার্যকরী পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। এদিকে একই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সন্তোষ সিং ওরফে পাপ্পু। তিনি বলেন, “গঙ্গা ভাঙন নিয়ে আমরা খুব আতঙ্কে আছি। প্রশাসনিক স্তরে ভাঙন রোধে পদক্ষেপ গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত কাজ শুরু হবে।”
আরও পড়ুন: সাগদিঘিতে মুখোমুখি সংঘর্ষ দুই লরির, দাউদাউ করে জ্বলে উঠল আগুন! মৃত দুই
প্রসঙ্গত, গত বছর জুন মাসে ভাঙনে বিধ্বস্ত বলাগড়ে মাটি মাফিয়াদের দাপট মনে করিয়ে দিচ্ছে পুরোনো স্মৃতি। যদিও বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে গঙ্গা ভাঙন জটিল ও পুরোনো সমস্যা। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে একাধিকবার ভাঙন রোধে নানান ব্যবস্থা নেওয়া হলেও কোনো সমাধান হয়নি। সমীক্ষা সূত্রে জানা গিয়েছে গত দু দশকে গঙ্গা গর্ভে বিলীন হয়েছে নদী সংলগ্ন একাধিক গ্রাম, বাড়ি, চাষের জমি ইত্যাদি। যার দরুন ভাঙনের ভয়ে ঘুম উড়েছে গঙ্গা তীরবর্তী একাধিক বসবাসকারী গ্রামের বাসিন্দাদের।