প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: মাস ঘুরলেই রাজ্যে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। তার জন্য চলছে তাই জোর কদমে শেষ প্রস্তুতি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন বৈঠকের মাধ্যমে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তিনি চান না কোনো রকম ভাবে এই সম্মেলন কোনো সমস্যার মুখোমুখি হোক। তাই সব দিক ভালো করে খতিয়ে দেখছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা। আর এই আবহে ফের খবরের শিরোনামে উঠে আসছে এশিয়ার সর্ববৃহৎ ও পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা ব্লক হিসেবে দেউচা পাঁচামির (Deucha Pachami coal block) নাম।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার দেউচা পাঁচামি নিয়ে একের পর এক বড় পরিকল্পনা করেই চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে বারবার শোনা গিয়েছে যে, এই কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলন সম্ভব হলে রাজ্যে বিদ্যুতের মাসুল কমবে। বাড়বে কর্মসংস্থান। তার জন্য টেন্ডারের ব্যবস্থা করার কথা অনেক আগেই বলেছিল প্রশাসন। অবশেষে সেই প্রতীক্ষার অবসান ঘটতে চলেছে। দেউচা পাঁচামি কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের পথে আরও এক ধাপ এগোল নবান্ন। গ্লোবাল টেন্ডার ডাকল পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
অবশেষে ডাকা হল গ্লোবাল টেন্ডার!
বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের শেষে অর্থাৎ ২০ ডিসেম্বর এই গ্লোবাল টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। আর এই টেন্ডারের দরপত্র আগামী ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পাঠাতে বলেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন। অন্ততপক্ষে ৩৪০০ একর জুড়ে প্রাথমিকভাবে দেউচা পাঁচামি প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে চলেছে। এরপর ধাপে ধাপে এই প্রকল্প সম্প্রসারিত হতে পারে। বিপুল টাকা বিনিয়োগ হবে এই প্রকল্পে। জানা গিয়েছে, প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আসার পাশাপাশি অন্তত এক লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হতে চলেছে এই কয়লা শিল্পে। এবার তারই প্রস্তুতি শুরু করে দিল রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক ভবন।
আরও পড়ুনঃ আবাসে পর এবার এদের ফ্রিতে জমি দেবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার
মিটল দেউচা পাঁচামি সংক্রান্ত সমস্যা
সম্প্রতি দেউচা পাঁচামি নিয়ে একটা সমস্যা তৈরি হয়েছিল। বলা হয়েছিল দেউচা পাঁচামি জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে একলপ্তে জমি অধিগ্রহণ না করে, ইচ্ছা মতো জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। যার ফলে এক প্রশাসনিক বৈঠকে তার দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তাঁর নির্দেশে রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ বীরভূমে গিয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেন। ওই দিন বৈঠকে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ছাড়াও ছিলেন বিদ্যুৎ সচিব শান্তনু বসু, বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান পিবি সেলিম-সহ রাজ্যের পদস্থ কর্তারা। আপাতত এই সমস্যা সমাধান হয়েছে। এবার তারপর পরবর্তী পদক্ষেপ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ মিলতে পারে ১৮ মাসের বকেয়া DA এরিয়ার, অষ্টম পে কমিশন নিয়ে আশাবাদী সরকারি কর্মীরা
জানা গিয়েছে এই গ্লোবাল টেন্ডার ভূতাত্ত্বিক রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে ডাকা হয়েছে। পরিবেশগত নানা দিকও খতিয়ে দেখা হচ্ছে প্রশাসনের তরফ থেকে। রাজ্যের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের আগে সেখানে থাকা মোটা পাথরের পারত সড়িয়ে ফেলতে হবে। যার ফলে ইতিমধ্যে প্রায় 376 একর জমিতে ব্যাসল্ট উত্তোলনের জন্য টেন্ডারের মাধ্যমে সংস্থা বাছাইয়ের কাজ হয়েছে। এদিকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই প্রকল্প নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী। তাই সেক্ষেত্রে জোরকদমে এই প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।