সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ মুর্শিদাবাদে অশান্তি (Murshidabad Violence) নিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সুপারিশ করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। নতুন ওয়াকফ আইনের প্রেক্ষিতে মুর্শিদাবাদ বেশ কিছুটা সময় ধরে অশান্ত হয়ে রয়েছে। প্রাণভয়ে বহু মানুষ অন্য জায়গায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। এদিকে দোকানপাট থেকে শুরু করে ঘর বাড়ি অবধি জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও সামনে এসেছে। এসবের মাঝেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে রিপোর্ট পাঠালেন বাংলার রাজ্যপাল। আর এই রিপোর্ট পাঠানোর পাশাপাশি তিনি এমন সুপারিশ করেছেন যারপরে চমকে গিয়েছেন সকলে।
বাংলায় এবার রাষ্ট্রপতি শাসন!
বাংলায় কি তাহলে খুব শীঘ্রই রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে চলেছে? এই জল্পনা উস্কে গিয়েছেন সিভি আনন্দ বোসের পাঠানোর রিপোর্টকে ঘিরে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস মুর্শিদাবাদে সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হিংসার বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন, যেখানে রাজ্য পুলিশের ‘ব্যর্থতা’ তুলে ধরে ঘটনাটির তদন্ত কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। সেইসঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সুপারিশও করা হয়েছে বলে খবর।
মুর্শিদাবাদে হিংসায় এখনও অবধি তিনজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আর এই ঘটনা আগুনে ঘি দেওয়ার মতো কাজ করেছে যেন। যাইহোক, রিপোর্টে রাজ্যপাল লিখেছেন, “রাজ্যের রাজনৈতিক হিংসার ইতিহাস এবং মুর্শিদাবাদের হিংসার প্রভাব রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলিতে ছড়িয়ে পড়ার ফলে, আমি কি ভারত সরকারকে কেবল বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যই নয়, বরং আইনের শাসনের প্রতি মানুষের আস্থা তৈরি করার জন্য সাংবিধানিক বিকল্পগুলি বিবেচনা করার পরামর্শ দিতে পারি?” তিনি লিখেছেন। তিনি রিপোর্টে জানান, হামলা পূর্ব পরিকল্পিত ছিল।
মুর্শিদাবাদে হিংসা পূর্ব পরিকল্পিত ছিল?
সিভি আনন্দ বোস লেখে, ‘মুর্শিদাবাদে অশান্তির ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত, স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতা। ধর্মীয় পরিচয়ের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক শোষণ হয়েছে।’ তিনি রাজ্যের শাসন ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের সুপারিশ করেছেন। তিনি পাকাপাকিভাবে মুর্শিদাবাদ ও মালদাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন ও নজরদারি বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছেন। এর পাশাপাশি যদি পরিস্থিতি খারাপের দিকে যায় তাহলে ৩৫৬ লাগুর সুপারিশও করেছেন রাজ্যপাল। এখন প্রশ্ন উঠছে, বাংলায় কি সত্যিই রাষ্ট্রপতি শাসন লাগু হবে অদূর ভবিষ্যতে? সেদিকে নজর থাকবে সকলের।
আরও পড়ুনঃ DA মামলার পরের দিনই, ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বড় পদক্ষেপ রাজ্যের
গত ১১ ও ১২ এপ্রিল মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান ও সামশেরগঞ্জ এলাকায় সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়িয়ে পড়ে, এতে তিনজনের মৃত্যু হয় এবং শতাধিক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। সবকিছু হারিয়ে রীতিমতো সর্বশান্ত বহু মানুষ।