প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনেকেই এখন ইংরেজি মাধ্যমের প্রতি বেশ জোর দেয়। তাইতো সকল অভিভাবকই চান যে তাঁর সন্তান যেন ইংরেজিতেই কথা বলেন। মাতৃভাষা বাংলা নয়, ইংরেজি ভাষাতেই ছেলেমেয়েদের দক্ষ বানাতে এখন বেশি আগ্রহী অভিভাবকরা। সেকারণে বেসরকারি স্কুলগুলির পাশাপাশি অনেক সরকারি স্কুলেও বর্তমানে মাতৃভাষার সঙ্গেই ইংরেজি ভাষাতেও সম্পূর্ণ পঠনপাঠন শুরু করানো হয়েছে। আর এবার পড়ুয়া টানতে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে জোর দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত অনেক বাংলা মাধ্যমেই এখন দেখা যায় ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা হাতে গোনা মাত্র। অনেক স্কুলই এখন প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে। অর্থাৎ শিক্ষক- শিক্ষিকা থাকলেও পড়ুয়াদের সংখ্যা হাতেগোনা। কারণ ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ গড়তে বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যমের স্কুলের উপরেই ভরসা রাখছেন বেশির ভাগ অভিভাবক। তাই এই অবস্থার মোকাবিলা করতে প্রাথমিক স্তর থেকেই ইংরেজি মাধ্যম চালু করার পরিকল্পনার ওপর বেশি জোর দেওয়া হল। ইতিমধ্যেই হাওড়া শহরের দু’টি বিদ্যালয়কে ইংরেজি মাধ্যম করা হয়েছে।
কী বলছেন সালকিয়া বিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জ?
যে দুটি বিদ্যালয়কে ইংরেজি মাধ্যম করা হয়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম হল সালকিয়া সাবিত্রী বালিকা বিদ্যালয়। ১৯২৩ সালে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পথ চলা শুরু করেছিল। কিন্তু সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর জন্য কয়েক বছরে বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের সংখ্যা একেবারে কমে গিয়েছিল। এর পরে সরকারি উদ্যোগে ২০১৯ সালে ওই বিদ্যালয়ে ইংরেজি মাধ্যম চালু হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে স্কুলের টিচার ইনচার্জ অনির্বাণ দাস বলেন, ‘‘একেবারে শূন্য থেকে শুরু করেছিলাম। কোভিড পরিস্থিতি কাটিয়ে বর্তমানে ঘুরে দাঁড়িয়েছে স্কুল। এখন ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা ১৮০ জন। ভর্তির আগে লিফলেট বিলি করে ও বিভিন্ন জায়গায় ব্যানার দিয়ে প্রচার করা হয়। খুব ভাল সাড়া মিলছে।’’
আরও পাঁচটি বিদ্যালয়কে ইংরাজি মাধ্যম করার পরিকল্পনা
হাওড়া জেলার দু’টি বিদ্যালয়ের সাফল্য দেখে আরও পাঁচটি বিদ্যালয়ে প্রাথমিক স্তর থেকে ইংরাজি মাধ্যম চালু করার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে শিক্ষা দফতরে। হাওড়া জেলা প্রাথমিক বিভাগের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু করা হয়েছিল। ইংরেজিতে দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। বর্তমানে সালকিয়া সাবিত্রী বালিকা বিদ্যালয় ও বেলুড় খামারপাড়া বিদ্যালয় দু’টি ইংরাজি মাধ্যম সরকারী স্কুল। এছাড়াও জেলার আরও পাঁচটি এ রকম বিদ্যালয়কে ইংরেজি মাধ্যম করার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।”