প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত মঙ্গলবার সল্টলেকে দু’টি বাসের রেষারেষিতে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রের। সেদিন শিশুটি তাঁর মায়ের সঙ্গে স্কুটিতে চেপে স্কুল থেকে ফিরছিল। কিন্তু বাসের গতির রেষারেষিতে প্রাণ চলে যায় ছোট্ট হৃদয়ের। তবে এই ঘটনা নতুন কিছু নয় এর আগে বহুবার এই ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তাতেও কোনো হেলদোল নেই। ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই অবিলম্বে সব পক্ষকে নিয়ে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রীকে বৈঠক ডাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বৃহস্পতিবার দুপুরে বসেছিল প্রশাসনিক বৈঠক।
পথ দুর্ঘটনা নিয়ে এবার বড় পদক্ষেপ নবান্নের!
সূত্রের খবর, গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মত বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা, বিভিন্ন পরিবহন নিগমের কর্তারা, বাস মালিক সংগঠন এবং ট্রাক মালিক সংগঠনের সদস্যরা। সেখানেই দুর্ঘটনা রুখতে কড়া হওয়ার বার্তা দিলেন পরিবহণ মন্ত্রী। এবং দুর্ঘটনা ঠেকাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব দিল নবান্ন। আর এই পদক্ষেপগুলো নেওয়ার মাঝেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল এবার থেকে একই সময়ে স্কুলগুলিতে ছুটি দেওয়া যাবে না।
স্কুল ছুটি প্রসঙ্গে কী বললেন ফিরহাদ হাকিম?
এদিন নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বৈঠকে বলেন, “আমি প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী হিসাবে স্নেহাশিসকে অনুরোধ করেছি, একটা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করতে ৷ এর মধ্যে কমিশন সিস্টেম থাকবে না ৷ যে মানবে না, তার পারমিট বাতিল হবে ৷ সেই রুটে আরেকটি ট্রাফিক মনিটরিং সিস্টেম থাকবে । কোন সময় কত ট্রাফিক দরকার সেটা এখান থেকে বোঝা যাবে ৷ এই নজরদারি সিস্টেমটি একটি জিপিএস সিস্টেমের সঙ্গে যোগ করে দিতে হবে ৷” এছাড়াও স্কুল ছুটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ স্কুলের সামনে রেলিং দিয়ে দেওয়া হবে ৷ আপাতত পুলিশ গার্ডরেল দিয়ে দেবে, যাতে বাস একটাই জায়গা থেকে ছাড়ে ৷ এক জায়গায় দু’তিনটে স্কুল থাকলে তাদের ছুটির সময়টা আলাদা আলাদা করতে হবে ৷ সব স্কুলগুলি একসঙ্গে ছুটি হলে রাস্তায় অরাজকতা হবে, সেটা হতে দেওয়া যাবে না ৷”
চালকের লাইসেন্স বাতিলের হুঁশিয়ারি
এছাড়াও এদিনের বৈঠকে স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন যে “বেপরোয়া গতির ফলে দুর্ঘটনায় যদি কোনও ব্যক্তির মৃত্যু হয় তাহলে চালকের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করবে পরিবহণ দফতর ৷ এবং সঙ্গে সঙ্গে চালকের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা-সহ, ক্ষতিপূরণ এবং আরও একগুচ্ছ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে রাজ্য সরকার ৷” পাশাপাশি পথচারী তথা সাধারণ মানুষকে রাস্তাঘাটে চলাফেরার ক্ষেত্রে সতর্ক করা হয়েছে এবং রাস্তায় সিগন্যাল মানার বার্তাও দিয়েছেন মন্ত্রী ৷