প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: হিজাব বিতর্কের পর এবার তুলসীর মালা! বারাসতের (Barasat) এক জনপ্রিয় বিদ্যালয়ে গলায় তুলসীর মালা পরে স্কুলে না আসার ‘ফতোয়া’ জারি করে বিতর্কে জড়ালেন প্রধান শিক্ষিকা। ক্ষুব্ধ অভিভাবকরাও। এদিকে তাঁর বার্তা নিয়ে ‘অপব্যাখ্যা’ করা হয়েছে বলে সাফাই দিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা। স্বাভাবিকভাবে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
ঘটনাটি কী?
তুলসীর মালা পড়া নিয়ে সম্প্রতি বারাসতের নবপল্লি যোগেন্দ্রনাথ বালিকা বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রানী দত্ত চক্রবর্তী স্কুলের অফিশিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একটি অডিও বার্তা দিয়েছিলেন। যেখানে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে কোন ছাত্রী যেন স্কুলে তুলসীর মালা পড়ে না আসে।
এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। স্কুলে প্রবেশের সময় কেউ তুলসীর মালা পরে এসেছে কি না, তা দেখার জন্য নিজে স্কুল গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে ‘চেকিং’ করেছেন। যা নিয়ে এবার স্বাভাবিকভাবে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বারাসতে।
তুলসীর মালা নিয়ে বিতর্ক!
এদিকে তুলসী মালার পরে স্কুলে যাওয়ার উপর তাঁর ‘নিষেধাজ্ঞা’ মোটেই পছন্দ হয়নি অভিভাবকদের একটা বড় অংশের। তাই নিয়ে প্রধান শিক্ষিকার বিরোধিতা করেছেন অনেকে। বিতর্কে পড়ে তাঁর বক্তব্যের ‘অপব্যাখ্যা’ করা হয়েছে বলে সাফাই দিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা। তিনি বলেন, “আমার ব্যাখ্যাকে অপব্যাখ্যা করা হয়েছে। স্কুলের দুই ছাত্রীর মধ্যে গণ্ডগোল হওয়ায় তুলসীর মালা ছেঁড়া হয়েছে। সেকারণেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও ধর্মকে আঘাত করতে আমি চাইনি।”
এছাড়াও তিনি আরও বলেন যে, “আমি কাউকে কোনও কিছু পরতে বারণ করতে পারি না। আমি শুধু বলেছি, যা পরা হচ্ছে তা যেন প্রকাশ্যে না আসে। অনেক ছাত্রীই তো আমাকে বলেছে যে তারা তুলসীর মালা পরে কিন্তু স্কুলে আসার সময়ে ভিতরে রেখে এসেছে, যাতে বাইরে থেকে দেখা না যায়।”
প্রধান শিক্ষিকার পাশে দাঁড়িয়েছে ছাত্রীরা
হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে তুলসীর মালা সাধারণত তৈরি হয় তুলসী গাছের ডাল বা শিকড় দিয়ে। বৈষ্ণবদের বিশ্বাস, এই মালা গলায় পরে থাকলে মন শান্ত হয়। ইতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি করে এবং ভগবান বিষ্ণু ও কৃষ্ণের আশীর্বাদ বয়ে আনে। সাধারণত বৈষ্ণবরাই এই মালা গলায় পরে থাকেন।
কেউ কেউ আবার তুলসীর মালা ব্যাগে নিয়েও জপ করেন। এটা ধর্মীয় ভাবাবেগ। কিন্তু এইভাবে কারোর উপর জোরজুলুম করা সেটা কোনোভাবেই মেনে নিতে চাইছেন না অনেকেই। অন্যদিকে তুলসীর মালা বিতর্কে প্রধান শিক্ষিকার পাশে দাঁড়িয়েছে ছাত্রীরা।
আরও পড়ুন: পর্যটন শিল্পে জোয়ার, ভারতে বিদেশি পর্যটকদের তৃতীয় সেরা গন্তব্য বাংলা, প্রথম দুইয়ে
নিন্দা করেছেন স্কুল সভাপতি
স্কুলের ছাত্রীরা এদিন জানিয়েছে যে, “এই বিষয়কে আমরা সমর্থন করছি। কারণ স্কুলের নিজস্ব পোশাক আছে, সেক্ষেত্রে তুলসীর মালা পরে আসাটা যেমন কাম্য নয় ঠিক তেমনই হিজাব পরে আসাও নয়। আসলে এই সবই নির্দিষ্ট ধর্মের চিহ্ন বহন করে। এখানে আমাদের একটাই পরিচয়, আমরা সকলে ছাত্রী।” তবে প্রধান শিক্ষিকার এই নির্দেশের নিন্দা করেছেন স্কুলের সভাপতি চম্পক দাস।
তিনি বিষয়টি শুনেই ফোন করে প্রধান শিক্ষিকাকে অন ক্যামেরা ধমক দিতে শুরু করেন। তিনি বলেন, “কোনও অবস্থাতেই কারোর ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করতে পারে না স্কুল। তুলসীর মালা পরে কেউ এলে স্কুলের পড়াশোনার কোনও ক্ষতি হওয়ার কথা নয়।”
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |