প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বেশ কয়েকদিন ধরে অমৃত ভারত প্রকল্পকে ঘিরে একের পর এক বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। যার মধ্যে অন্যতম হল শ্রীরামপুর স্টেশন এবং স্টেশন লাগোয়া এলাকায় হকারদের দাদাগিরি। প্রকল্প রূপায়িত করতে তাঁদের উচ্ছেদ অভিযানে নামার কথা ছিল রেলের। কিন্তু, জল গড়িয়েছে হাইকোর্টে। হকার উচ্ছেদে এবার স্থগিতাদেশ দিয়ে দিল রাজ্যের শীর্ষ আদালত। ২১ মার্চ পর্যন্ত হকারদের উচ্ছেদ করা যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
ঘটনাটি কী?
শ্রীরামপুর স্টেশন এবং স্টেশন লাগোয়া এলাকায় উন্নয়নের স্বার্থে ভারতীয় রেল অমৃত ভারত প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু করেছে । আর ওই প্রকল্পের আওতায় তাই শ্রীরামপুর স্টেশন লাগোয়া এলাকায় জবরদখলকারীদের উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তকে একদমই মানতে নারাজ ওই হকাররা। তাঁদের দাবি কমপক্ষে ৫০ বছর ধরে স্টেশন লাগোয়া এই রেল জমিতে ব্যবসা করছেন তাঁরা কীভাবে সবটা জানা সত্ত্বেও আচমকাই নোটিস দিয়ে উচ্ছেদের কথা জানাচ্ছে রেল। তুমুল গোলযোগের সৃষ্টি হয়। গতকাল ছিল হকারদের উচ্ছেদ করার দিন। আর এবার এই বিতর্ক উচ্ছেদ এর জল গড়াল কলকাতা হাইকোর্টে।
হকারদের পাশে হাওড়া ডিভিশন হকার ইউনিয়ন
সূত্রের খবর, শ্রীরামপুর স্টেশন এবং স্টেশন লাগোয়া এলাকায় কেন্দ্রের নির্দেশে হকার উচ্ছেদের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ করে চলেছে এলাকায় জবরদখলকারীরা। আর তাঁদের হয়ে একই প্রতিবাদ শুরু করেছে ইস্টার্ন রেলওয়ে হাওড়া ডিভিশন হকার ইউনিয়ন। এই ইউনিয়ন শাসকদল তৃণমূল দ্বারা প্রভাবিত। তাঁরাই এবার এই বিষয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। জানা গিয়েছে এই ইউনিয়নের হয়ে লড়ছেন আইনজীবী শীর্ষন্য বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বিচারপতির কাছে দাবি করেন, শ্রীরামপুর স্টেশন এবং স্টেশন লাগোয়া এলাকায় হকারদের কোনো লাইসেন্স না থাকলেও দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে তাঁরা সেখানে কাজ করে চলেছে। সেক্ষেত্রে তাই ওই সব হকাররা বহিরাগত নয়।
আর পড়ুনঃ তথ্য গোপন করে প্রাথমিকে অযোগ্যদের চাকরি! হাইকোর্টের বড় ফ্যাসাদে পর্ষদ
উচ্ছেদ স্থগিত রাখার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
এদিকে হকারদের লাইসেন্স না থাকা প্রসঙ্গকে টার্গেট করে ওই মামলার শুনানিতে বিচারপতি অমৃতা সিনহা এক বিস্ফোরক প্রশ্ন তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “ হকাররা ওই এলাকায় ৫০ বছর ব্যবসা করলেও তাদের লাইসেন্স কোথায়?” যদিও এদিন সব সমস্ত সওয়াল-জবাব শেষে শেষবারের জন্য ডিআরএম হাওড়াকে ওই হকারদের নথি দেখে শুনানি করে নিজেদের বক্তব্য জানানোর সুযোগ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সেই কারণে আগামী ২১ মার্চ পর্যন্ত উচ্ছেদ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এবং এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ১৩ মার্চ। ওইদিনই এ বিষয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে আদালত।