প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বাংলাদেশে রীতিমত বিক্ষোভের আগুন যেন জ্বলছে চারিদিকে। আর তার আঁচ যেন ছড়িয়ে পড়েছে ভারতের বুকে। ওপার বাংলার সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর অত্যাচার যেন চাবুকের মত লাগছে ভারতবাসীর মনে। তার উপর রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে বাংলাদেশে গ্রেফতার করা হয়েছে সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে। যার জেরে ক্ষোভে ফুঁসছে বাংলাদেশের হিন্দু সমাজ। দিকে দিকে তাই প্রতিবাদ মিছিল ছড়িয়ে পড়েছে। বাদ যায়নি ভারতও। আর এই আবহেই এবার বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার ঘিরে গর্জন শোনা গেল প্রধান শিক্ষিকা মোনালিসা মাইতির কণ্ঠে।
ফের প্রতিবাদের কন্ঠে গর্জে উঠল তারাসুন্দরী বিদ্যাভবনের প্রধান শিক্ষিকা!
২০২১ সালে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের একটি বালিকা বিদ্যালয় থেকে হাওড়ার তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যাভবনে প্রধান শিক্ষিকা হয়ে আসেন মোনালিসা মাইতি। এই চার বছরে তিনি যেমন গোটা স্কুলের শিক্ষা ব্যবস্থাকে নিজের হাতে আগলে রেখেছেন ঠিক তেমনই ছাত্রীদেরকে কোনো অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে আপোস না করার শিক্ষাও দিয়ে এসেছেন। যার অন্যতম হল আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্দোলনের সময়ে তিনি দ্রোহের পথ বেছেছিলেন। রাস্তায় নেমেছিলেন স্কুলের ছাত্রীদের সঙ্গে নিয়ে। সেই সময়ে সমাজে বেশ প্রশংসা কুঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। তবে এ বার মোনালিসা দেবী বাংলাদেশে চলা অশান্তির প্রতিবাদে নাগরিক সমাজকে ডাক দিয়েছেন পথে নামতে।
কী বলছেন মোনালিসা মাইতি?
মোনালিসা মাইতির সাফ বার্তা বাংলাদেশে যা হচ্ছে তা সমর্থনযোগ্য নয়। তিনি বলেছেন, “প্রত্যেক স্বাধীন দেশের শাসকের দায়িত্ব নাগরিকদের সমানভাবে পরিষেবা দেওয়া। বাংলাদেশের সরকার সেটা করতে ব্যর্থ হয়েছে। সেখানে যা হচ্ছে, তা ঠিক হচ্ছে না। এই বার্তাই আমি দিতে চাই।” মোনালিসা দেবী আরও বলেন, “গত কয়েক মাস ধরে দেখছি, প্রতিবেশী দেশে কী চলছে। আমরা এত দিন চুপ করে ছিলাম। কিন্তু আজ যখন দেখছি, একটি স্বাধীন দেশে সাধারণ মানুষের উপরে অকারণে অত্যাচার চলছে, তখন আর চুপ করে থাকা যায় না।” তাই এই প্রতিবাদের মিছিলের ডাক দিয়েছেন আজ বিকেল ৪ টেয় রবীন্দ্রসদনে। সেখানেই সকলকে জড়ো করার অনুরোধ করেছেন।
এদিকে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদে কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ হয়েছে। এরপর বাংলাদেশ সরকার কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের বাইরে বিক্ষোভের বিষয়ে ভারত সরকারের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় এবং হাইকমিশনে কর্মরত সকল আধিকারিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার আবেদন জানানো হয়েছে।