প্রীতি পোদ্দার, পুরুলিয়া: বেসরকারি হোক কিংবা সরকারি, প্রত্যেকটি স্কুলেই প্রধান শিক্ষক (Head teacher) থাকেন। যদি কোনো কারণে ওই পজিশনটা ফাঁকা থাকে তাহলে ঐ দায়িত্বটা পালন করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। প্রতিদিন স্কুলে উপস্থিত থাকতে হয় তাঁদের। কিন্তু সম্প্রতি জানা গিয়েছে, পুরুলিয়ার এক সরকারী স্কুলে মাত্র ২ জন শিক্ষক রয়েছেন। এবং প্রধান শিক্ষকের বদলে রয়েছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তবে অভিযোগ হল দীর্ঘ চার থেকে পাঁচ বছর ধরে স্কুলে আসেন না সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
ঘটনাটি কী?
ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়ার বোরো থানার পুড়দোহা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রধান শিক্ষককে পড়ুয়াদের বাবা-মায়েরাও সেভাবে কোনও দিন দেখেননি। কোনোরকমে পড়াশোনা চলে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে এই প্রাথমিক স্কুল এভাবেই ধুঁকছে। তাই গ্রামবাসীরা এদিন ক্ষিপ্ত হয়ে স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। আর তালা ঝোলানোর পরেই আগমন হয় প্রধান শিক্ষকের।
কী বলছেন প্রধান শিক্ষক?
গতকাল সেই স্কুলে অবশেষে দেখা মিলল প্রধান শিক্ষক বিনয় মাহাতোর। স্কুলে ঢুকতেই তাঁকে প্রশ্ন করা হলে কেন নিয়মিত স্কুলে আসেন না? প্রশ্ন করা হতেই তিনি সঙ্গে সঙ্গে বললেন, ‘আসি। তবে মাঝে মধ্যে আসি।’ কেন নিয়মিত আসেন না স্কুলে? প্রধান শিক্ষকের জবাব, ‘আমার শরীরটা ভাল না।’ তাঁর দাবি, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও এই কথা জানিয়েছেন তিনি। তাঁকে নাকি মাঝে মধ্যেই আসতে বলা হয়েছে।
প্রধান শিক্ষকের এই মন্তব্যের ভিত্তিতে গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এই বিষয়টা নিয়ে একাধিকবার এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিদর্শককে জানানো হয়েছে। এমনকি অফিসে গিয়ে অভিযোগপত্র জমাও দিয়ে এসেছেন। তারপরও কোনও কাজ না হওয়ায় এদিন বাধ্য হয়ে তাঁরা স্কুলে তালা দিয়েছেন। গ্রামবাসী গোপীনাথ দাস বলেন, “কে হেডমাস্টার, পডুয়ারাও চেনে না। ৫-৬ বছর ধরে যদি কেউ আসা যাওয়া না করে তাহলে চিনবে কী করে? তাই দ্রুত এই পরিস্থিতির সমাধান করতে হবে বিদ্যালয় পরিদর্শককে।”