বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ঘটনা। সেবার বাংলার নন্দীগ্রাম বিধানসভা আসনে পুলিশি ব্যবস্থাপনা ছিল আটসাট। বিশৃঙ্খলা ঠেকানোর দায়িত্বে ছিলেন আইপিএস অফিসার নগেন্দ্রর ত্রিপাঠি (IPS Nagendra Tripathi)। এই পুলিশকর্তাই নন্দীগ্রামের বুকে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখে চোখ রেখে কথা বলেছিলেন। বলেছিলেন, ম্যাডাম খাকি পরে দাগ দেবেন না। এবার সেই সাহসী পুলিশকর্তা নগেন্দ্রকে ডেকে পাঠাল দিল্লি।
কেন নগেন্দ্রর ডাক পড়ল দিল্লিতে?
সূত্রের খবর, বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আন্ডার সেক্রেটারি সঞ্জীব কুমার ডেপুটেশনে নগেন্দ্রকে চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থকে। এবার সেই সূত্র ধরেই, নগেন্দ্রকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে সিআইএফএস অর্থাৎ সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল করার কথা ভাবছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
জানা যাচ্ছে, নগেন্দ্রকে নিজের কাজের প্রতি দক্ষতা ও কর্তব্যপরায়ণ মনোভাবকে সম্মান জানিয়েই তাঁকে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর অংশ করতে চাইছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অনেকেই মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সামনে দাঁড়িয়ে সাহসী মন্তব্য করার পর থেকেই জনপ্রিয় মুখ হয়ে উঠেছেন আইপিএস নগেন্দ্রকে।
নগেন্দ্র ছাড়াও দিল্লিতে ডাক পড়েছে আরও দুই আইপিএস কর্তার
একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রকে খবর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে নগেন্দ্রকে ত্রিপাঠি ছাড়াও আরও দুই যোগ্য আইপিএস অফিসারকে ডেপুটেশনে চেয়েছে দিল্লি। জানা যাচ্ছে, অবধেশ পাঠক ও আন্নাপাই নামক দুই উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাকে ডেপুটেশনে উপস্থিত থাকতে বলেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কিন্তু কোন পদে বসানো হবে তাঁদের? কয়েকটি সূত্র বলছে, মূলত এই দুই অফিসারকে ডিআইজি পদে পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে নবান্ন তাদের ছাড়তে রাজি হবে কিনা সে ব্যাপারে সংশয় যথেষ্ট তীব্র।
আরও পড়ুন: ঘুরবে মোড়, ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বিরাট পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের
অনুব্রত গড়ে দায়িত্বে ছিলেন ত্রিপাঠি
2021 বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামের দায়িত্বে থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে সাহসী সুরে কথা বলার পরই চেনা মুখ হয়ে ওঠেন নগেন্দ্রকে। তবে ভোট পর্ব মেটার পরই তাঁকে অনুব্রত মণ্ডলের গড় বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার করে পাঠানো হয়।
সেই সময় অনেকেই বলেছিলেন, বীরভূমের বাঘ অনুব্রত যথেষ্ট পছন্দ করতেন নগেন্দ্রকে। তবে গরু পাচার কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পরই আইপিএস ত্রিপাঠিকে বদলি করে দেওয়া হয়। সরকারি সিদ্ধান্তে তাঁর পরবর্তী পদ হয়েছিল পুলিশ ডাইরেক্টরেটের ওএসডি। এবার সেই পোড় খাওয়া পুলিশ কর্তাকে সিআইএসএফ বাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য ডেপুটেশনে ডেকে পাঠালো দিল্লি।