প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সালটা ছিল ১৯৪৩। রাজ্যের সাধারণ বাসিন্দাদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল হাওড়া ব্রিজ। যেটি কিনা আজও বাঙালির কাছে এক গর্ব। সেই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত টানা পরিষেবা দিয়ে আসছে আধুনিক প্রযুক্তিবিদ্যার অন্যতম নির্দশন এই সেতু। আশ্চর্যের বিষয় হল সাতশো মিটারেরও বেশি লম্বা, ৩০ মিটার চওড়া এই বিপুল আকারের ব্রিজটি তৈরিতে ব্যবহার হয়নি একটিও নাট-বল্টু। সম্পূর্ণ ব্রিজটি ধাতব পাত জুড়ে ব্রিজটি তৈরি হয়েছিল। তবে এবার এই কয়েক দশকের পুরনো এই হাওড়া ব্রিজের উপর যানবাহনের চাপ কমাতে নেওয়া হতে চলেছে এক বড় উদ্যোগ। তৈরি করা হবে একটি সিঙ্গল পাইলন কেবিল–সহ রোড ওভারব্রিজ।
চার লেনের কেবল টাইপ ব্রিজ এবার হাওড়ায়
পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ে অটল সেতুর পর এবার হাওড়ায় নির্মাণ করা হতে চলেছে ভারতের দ্বিতীয় নতুন লোহার ডেক ব্রিজ। জানা গিয়েছে হাওড়া ব্রিজের সঙ্গে যেমন হাওড়া স্টেশন থেকে শুরু করে জিটি রোড সংযুক্ত করা। ঠিক তেমনি এই নয়া সেতুর সঙ্গেও যুক্ত করা হবে স্টেশন এবং জিটি রোড। আসলে বিগত কয়েক মাস ধরে হাওড়া ব্রিজে অনেক যানজট তৈরি হয়েছে। তাই এই পুরোনো ব্রিজে যানজটের চাপ কমাতে বানানো হচ্ছে এই সেতু। পরিকাঠামো দিক থেকে এই সেতুর দৈর্ঘ্য ৬০ মিটার থেকে বেড়ে হচ্ছে ১৩৪ মিটার। আর এই পুরনো সেতুর জায়গায় তৈরি হচ্ছে চার লেনের কেবল টাইপ ব্রিজ।
পুরনো সিগন্যালিং সিস্টেম পরিবর্তন করা হচ্ছে
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন মতে, তাইওয়ানের সংস্থা উইকন এই সেতুর নকশা তৈরির দায়িত্বে রয়েছে। এবং এই সেতু গড়ে তোলার দায়িত্বে রয়েছে এসপি সিংলা কনস্ট্রাকশন প্রাইভেট লিমিটেড। আর এই ব্রিজ তৈরিতে খরচ হবে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। এবং এই ব্রিজ তৈরির জন্য হাওড়া রেল স্টেশনের ওল্ড কমপ্লেক্সে কয়েকটি প্ল্যাটফর্ম আরও লম্বা করা হবে। অর্থাৎ ১, ৭, ১০, ১১, ১২, ১৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য বাড়ানো হবে। দূরপাল্লার অনেক ট্রেন সেই প্ল্যাটফর্ম দিয়ে যাতায়াত করবে।
বলে দিই, এই ব্রিজটি চাদমারি ব্রিজ নামেই পরিচিত। এছাড়াও পুরনো সিগন্যালিং সিস্টেমের পরিবর্তে ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেম তৈরির সুযোগও থাকছে। আর সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হল যাত্রীদের সুবিধার জন্য ২০২৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যে ১৫ এবং ২৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ করা হচ্ছে।