প্রীতি পোদ্দার: চলতি বছর বর্ষা দেরি করে প্রবেশ করলেও খামতি রাখেনি কোন কিছুতেই। কিন্তু বর্ষায় আনন্দ উপভোগের প্রধান উপাদান ইলিশের কদর এবার তেমন পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ থেকে টনে টনে ইলিশ ভারতে এসে পৌঁছলেও সে ইলিশের দাম এতটাই বেশি যে ভারতের বাজারে সাধারণ মানুষের নাগালের একদম বাইরে ছিল এই মাছ। তাইতো বুকে পাথর চাপা দিয়ে বাংলাদেশী ইলিশ ভুলে দীঘা-কোলাঘাটের ইলিশ খেয়েই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে হল বাঙালির। তবে এর মাঝেই এক আকস্মিক কাণ্ড ঘটল। দামোদর নদে এবার মাছের জালে ধরা পড়ল ইলিশ।
২০ বছর পর ইলিশের দেখা মিলল দামোদরে!
বেশ কয়েকদিন আগে ডিভিসি জল ছাড়ায় দামোদরে মুহূর্তের মধ্যে জল বেড়ে যাওয়ায় প্লাবিত হয়ে পড়েছিল দামোদর সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা। তবে এই জল ছাড়ার ফলে প্রায় ২০ বছর পর দামোদর নদে ঢুকে পড়ল বাঙালির প্রিয় ইলিশ। সূত্রের খবর, গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের দামোদর নদে মৎস্যজীবীদের জালে ধরা পড়ল প্রায় ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ। পরে সেই মাছ নিয়ে আসা হয় জামালপুর বাজারে। আর বাজারে ঢুকতে না ঢুকতেই কাড়াকাড়ি পড়ে গেল মাছের আড়তে। শুরু হল ইলিশের নিলাম। দাম বাড়তে বাড়তে অবশেষে সেই মাছ ২ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়।
অতীতে ইলিশের দেখা পাওয়া যেত দামোদর নদে
গত বৃহস্পতিবার রাতে জামালপুর ও কালনার মাঝামাঝি এলাকায় দামোদরে মাছ ধরছিলেন পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের উত্তর মোহনপুর গ্রামের বাসিন্দা তপন বিশ্বাস। আগে দামোদরের মোহনা হাওড়া জেলায় যেখানে ভাগীরথী মিশেছে সেখানে আগে প্রচুর পরিমাণে বর্ষায় ইলিশের দেখা মিলত। কিন্তু সাম্প্রতিককালে সেই মোহনা থেকে প্রায় আড়াইশো কিলোমিটার নদীপথ দূরে পূর্ব বর্ধমান জেলায় একদমই পাওয়া যায় না ইলিশ। অবশেষে সেই ইলিশের খরা এত বছর পর কাটল।
মৎস্য দফতরের আধিকারিক নিত্যানন্দ মণ্ডল জানান, ইলিশ মাছ নোনা জলের, মিষ্টি জলে দেখা যায় না। কিন্তু ডিম দেওয়ার সময় তারা মোহনা থেকে বিভিন্ন নদীতে চলে যায় এবং সেভাবেই হয়তো দামোদর নদে চলে এসেছে।