প্রীতি পোদ্দার: গত শনিবার, মুখ্যসচিব জুনিয়ার ডাক্তারদের ইমেল পাঠিয়ে সোমবার অনশন তুলে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু আগের দিন রবিবার জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে জানানো হয়েছিল, অনশন না তুলেই নবান্নে সোমবার বৈঠকে যোগ দিতে যাবেন তাঁরা। আর তাই সেই অনুযায়ী সোমবার নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট আগেই নবান্নে পৌঁছে যান ১৭ জন জুনিয়র ডাক্তার। ৫টার এক মিনিট আগে শুরু হয়ে যায় বৈঠক। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম, যাঁকে অপসারণের দাবি তুলেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। দু’ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে বৈঠক। আর এই বৈঠকেই রীতিমত মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাকরণ শুধরে দিলেন এক জুনিয়র চিকিৎসক।
জুনিয়র ডাক্তারের কাণ্ডে অবাক সকলে
বহু প্রতীক্ষিত এই বৈঠকে আলোচনা করার পর যখন জুনিয়র ডাক্তাররা নবান্ন থেকে বেরোচ্ছিলেন তখন সকলের মধ্যে নজর কেড়ে ছিলেন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার মনীষা ঘোষ। তিনিই এদিনের বৈঠকে লাইভ স্ট্রিমিং এ মুখ্যমন্ত্রীর বলা কথাগুলোকে শুদ্ধ বাংলা ভাষায় ব্যাখ্যা করে রীতিমত ব্যাকরণ শুধরে দিলেন। রাজ্যের একজন মুখ্যমন্ত্রীকে কেউ যে এইভাবে ব্যাখ্যা দিতে পারেন, সেটা দেখেই অবাক সকলে।
কে এই মনীষা ঘোষ? Junior Doctor Manisha Ghosh
সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে জুনিয়র ডাক্তার মনীষার ওই ব্যাখ্যা। যেখানে মনীষা স্পষ্ট ভাবে জানাচ্ছেন, “কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলে তাঁকে অভিযুক্ত বলা হয়। যতক্ষণ না তিনি দোষী বা নির্দোষ প্রমাণিত হচ্ছেন, ততক্ষণ তিনি অভিযুক্ত। অভিযোগ প্রমাণিত হয়ে গেলে তিনি দোষী। ব্যাকরণ বা আইনের দিক থেকে এতে কোনও ভুল নেই।” আর যখন মনীষা নবান্ন সভাঘরে এই ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন, তখন সেখানে তৈরি হয় এক মুহূর্তের স্তব্ধতা। যদিও তিনি নিজে বা তাঁর বাকি ১৬ জন ‘সহযোদ্ধা’র কেউই জানতেন না যে নবান্ন-বৈঠকের ‘লাইভ স্ট্রিমিং’ হচ্ছে। যদিও মনীষার মতে লাইভ স্ট্রিমিং চললেও তার মতামত তখনও কিছু পরিবর্তন হত না।
বছর চব্বিশের মনীষা ২০১৮ সালে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস পড়তে গিয়েছিলেন। সেখানেই হস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করেছেন। এখন ওই কলেজে হাউসস্টাফশিপ করছেন। আরজি কর-কাণ্ডের আবহে প্রশাসনের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের যতগুলি বৈঠক হয়েছে, সব ক’টিতেই ছিলেন মনীষা। তবে যেবার নবান্নে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে বৈঠক হয়, তখন সেখানে যাননি তিনি। স্বাস্থ্য ভবনে মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকেও ছিলেন।