প্রীতি পোদ্দার, বর্ধমান: শীতের মরশুম পড়তে না পড়তেই বিভিন্ন জেলায় নানা রকম সরকারি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। তেমনই বিগত কয়েক বছর ধরেই বর্ধমান পুরসভার (Burdwan Municipality) উদ্যোগে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই রীতি মেনে এই বছরেও বর্ধমান পুরসভার আয়োজনে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হয়। গত ২১শে ডিসেম্বর থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই উৎসব চলার কথা। কিন্তু অনুষ্ঠানের মাঝেই ঘটল বিপত্তি। তাতেই ক্ষুব্ধ দর্শকরা।
ঘটনাটি কী?
জানা গিয়েছে, গতকাল অর্থাৎ শনিবার ছিল এই অনুষ্ঠানের শেষ দিন। কিন্তু গতকাল সন্ধ্যার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কিছুটা আগেই মঞ্চে উঠে পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার ঘোষণা করেন এই অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হোক। এবং কারণ হিসেবে জানান দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে দেশ জুড়ে ৭ দিন ধরে রাষ্ট্রীয় শোক চলার কারণেই অনুষ্ঠান বাতিলের কথা ঘোষণা করেন তিনি। এদিকে গত শুক্রবারও রাষ্ট্রীয় শোকের মধ্যেই পুর উৎসবের অনুষ্ঠান চলে। আগে থেকে না জানিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় শুরু হয় শিল্পীদের একাংশের বিক্ষোভ। এমনকি পুরসভার কর্মীদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শিশুশিল্পীদের অবিভাবকেরাও।
ক্ষুব্ধ শিল্পীদের অভিভাবকরাও
এই প্রসঙ্গে উৎসবে অংশগ্রহণকারী নৃত্য শিক্ষিকা লীনা বর্মণ জানিয়েছেন, ‘‘ আজ বিকেল থেকে অনুষ্ঠানের পূর্বনির্ধারিত সময় সূচী অনুযায়ী নাচ-গান সবই হল। তার পর মাঝপথে হঠাৎ করে অনুষ্ঠান বন্ধ করা দেওয়া হল। গতকালও সাত দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে, এবং মাঝপথে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাহলে তো আজ অনুষ্ঠান না করলেই হত। এমন করলে আগেভাগে জানিয়ে দিলে আমরা আর আমাদের বাচ্চাদের সাজিয়ে গুজিয়ে আনতাম না।’’ সকলেরই অভিযোগ, আগে থেকে কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিলে এই ভোগান্তি হত না তাঁদের।
এই বিষয়ে পুরসভার চেয়ারম্যান কিছু বলতে প্রথমে রাজি হননি। পরে তিনি জানিয়েছেন, হস্তশিল্পীদের কথা মাথায় রেখে কোনওরকমের পুর উৎসবের মেলা আগের মতোই চলবে, কিন্ত কোনও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান হবে না। এই সিদ্ধান্তে সমালোচনা করেন স্থানীয় বিরোধী নেতৃত্ব। জেলা বিজেপি মুখপাত্র শান্তিরূপ দে বলেন, “রাষ্ট্রীয় শোকের ঘোষণা আগেই হয়ে গিয়েছিল, তার পরেও কেন এই অনুষ্ঠান চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।’