‘আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা’, দোষী সাব্যস্ত হতেই শিয়ালদা কোর্টে কী বলতে চাইল সঞ্জয়?

Published on:

rg kar case

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: তিলোত্তমা বিচারের দিকে তাকিয়ে গোটা বাংলা। গত বছর ৯ আগস্ট রাতে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সেমিনার রুমে উদ্ধার হয়েছিল দ্বিতীয় বর্ষের এক তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ। অভিযোগ উঠেছিল তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। আর তার জেরে তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার পরের দিনেই কলকাতা পুলিশ এই ঘটনায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

WhatsApp Community Join Now

এরপর গত ১৩ আগস্ট CBI-কে এই মামলার তদন্তভার দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। পরে ১৮ আগস্ট সেই মামলা শোনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। আর তখনই আরজি করের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। শুধু আর্থিক অনিয়ম নয় তাঁর বিরুদ্ধে উঠে আসে ভয়ংকর নানা তথ্য। কিন্তু CBI এর তদন্ত দিনের পর দিন চলতে থাকলেও তথ্যের অভাবে সঞ্জয় রায় ছাড়া আর কাউকেই ধর্ষণ কাণ্ডে গ্রেফতার করা যায়নি। তদন্তে যেসকল তথ্য বা প্রমাণ উঠে এসেছে তা সবটাই সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে আসছে। তাই সঞ্জয়ের ফাঁসি হওয়া উচিত বলে আগেই আদালতে সওয়াল করেছিল CBI।

আজ রায়দানে কী বললেন বিচারপতি?

অবশেষে আজ ১৬২ দিন পর আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় বড় রায় দিল শিয়ালদা আদালত। সকাল থেকেই কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় শিয়ালদা কোর্ট চত্বর। পুলিশে ছয়লাপ হয়ে যায় গোটা এলাকা। রাস্তা থেকেই তৈরি করা হয় ব্যারিকেড। দুপুর ১টা নাগাদ পুলিশের ভ্যানে চেপে সঞ্জয় রায়কে নিয়ে আনা হয়। এর পর দুপুর ২.৩০টে নাগাদ রায় দেয় আদালত। আর এই রায়ে বিচারক অনির্বাণ দাস ধৃত সঞ্জয় রায়কেই দোষী সাব্যস্ত করলেন। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার তিনটি ধারায় সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ৬৪ নং ধারায় মৃত্যুর জন্য দায়ী, ৬৪ ধারায় ধর্ষণের শাস্তি এবং ১০৩ নং ধারায় খুনের ধারায় চার্জগঠন করা হয়েছিল। কিন্তু প্রত্যেকবারের মত এই বারেও আদালতে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে চলেছেন সঞ্জয়।

আরও পড়ুনঃ বুমরাহ, শামিকে রেখেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দল! টিম ইন্ডিয়ার ১৫ সদস্যের নাম ঘোষণা BCCI-র

ফের আদালত চত্বরে হুংকার সঞ্জয়ের

এদিন আদালতে সকলের সামনে আরজি কর মামলায় অন্যতম ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায় জানিয়েছেন যে, “আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি কিছু করিনি।” তবে তাঁর কথার মাঝেই পাল্টা দাবি করেন বিচারক অনির্বাণ দাস। তিনি বলেন, “CBI এতদিন তদন্ত করে যা প্রমাণ দিয়েছে তাতে একমাত্র আপনিই দোষী। তাই আপনাকে শাস্তি পেতেই হবে।” তার সঙ্গে পাল্টা সঞ্জয় বলেন, “ দয়া করে আমার কথা শুনুন। আমি কিছু করিনি। আমাকে IPS-রা যা বলেছেন, তাই বলেছি। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা রয়েছে। আমি ধর্ষণ করলে সেটা ছিঁড়ল না কেন?” আর তখনই বিচারক জানিয়ে দেন যে সঞ্জয়ের বক্তব্য আগামী সোমবার শোনা হবে।

আরও পড়ুনঃ শিয়ালদা স্টেশনে ওরা কারা? টিটি ধরতেই যা তথ্য উঠে এল! আতঙ্ক বাংলা জুড়ে

তবে এতেই বারবার প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে যে সঞ্জয় ছাড়া আর কে এই ঘটনায় যুক্ত ছিল? তা নিয়ে আজও প্রশ্ন রয়েছে। এমনকি প্রথম থেকেই নির্যাতিতার পরিবার সুপ্রিম কোর্টে এই দাবি করে আসছে যে এই ঘটনায় আরও অনেকে যুক্ত রয়েছে। কিন্তু খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় CBI একা সঞ্জয়কেই অভিযুক্ত ঠাহর করে। আদালতও সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করেছে। সুপ্রিম কোর্টে মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার পরই যেন রায় দেওয়া হয় বলে আবেদন জানায় নির্যাতিতার পরিবার। কিন্তু শিয়ালদা আদালত জানায়, সুপ্রিম কোর্ট কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। ১১ নভেম্বর থেকে শুনানি শুরু হয়। আর আজ তাই মামলায় রায়দান করা হচ্ছে।

সঙ্গে থাকুন ➥
X