প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ওয়াকফ সংশোধনী বিলকে ঘিরে একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলেছে দেশ জুড়ে। ইতিমধ্যেই এই আইনের বিরোধিতা করে একাধিক মামলা উঠে এসেছে সুপ্রিম কোর্টে। আগামী সপ্তাহে সেগুলির শুনানির সম্ভাবনা। তারই মধ্যে গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে দেশে কার্যকর হল ওয়াকফ আইন। এদিন এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে একথা জানিয়েছে কেন্দ্র। আর সেই আবহেই আরও অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হল বাংলায়। মঙ্গলবারই এই বিলের প্রতিবাদে উত্তেজনা ছড়ায় মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে। সংখ্যালঘু ছাত্র ও যুব সংগঠন পথে নেমে বিক্ষোভ দেখায়। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হওয়ায় বন্ধ করে দেওয়া হল ইন্টারনেট পরিষেবা
ঘটনাটি কী?
সূত্রের খবর, সংশোধিত ওয়াকফ আইন প্রত্যাহারের দাবিতে গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার ব্যাপক উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর (Jangipur)। এই বিলের প্রতিবাদে সংখ্যালঘু ছাত্র ও যুব সংগঠন পথে নেমে বিক্ষোভ দেখায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বাধা দিলে পুলিশের উপর পাল্টা চড়াও হয় বিক্ষোভকারীরা। এমনকি পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ইট। শুধু তাই নয় পুলিশের দুটি গাড়ি রীতিমত জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। তার ফলে এলাকায় শান্তি ফেরাতে তৎপর হয়ে ওঠে প্রশাসন। এবং সাময়িকভাবে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি কমাতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও।
বন্ধ করা হল ইন্টারনেট পরিষেবা
এদিকে গতকালের ঘটনায় জঙ্গিপুরে রীতিমত থমথমে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে জঙ্গিপুর মহকুমার রঘুনাথগঞ্জ ও সুতি এলাকা। দরকার ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোতে চাইছে না স্থানীয় বাসিন্দারাও। মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। পরিস্থিতি যাতে আর বেগতিক না হয় তার জন্য একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। ৫ জনের বেশি যাতে এলাকায় জমায়েত না হয় তারজন্য নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন। রাজ্য পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, জঙ্গিপুরের পরিস্থিতি এখন পুরো নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু তবুও প্রশাসন আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সেখানকার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্যদিকে গতকালের ঘটনায় যে সকল ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা হয়েছে সেই সকল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ যাতে কোনও ভুল খবর বা গুজব না ছড়ায়, সেই আর্জি জানিয়েছে পুলিশ। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজই জঙ্গিপুর যাওয়ার কথা জানিয়েছে বিধায়ক জাকির হোসেন। এদিকে গত দুদিন ধরে জঙ্গিপুর, সুতি, সামশেরগঞ্জ, রঘুনাথগঞ্জ এলাকায় দফায় দফায় বিক্ষোভ হয়েছে ওয়াকফ বিলের বিরোধিতা করে। যার ফলস্বরূপ মঙ্গলবারই পরিস্থিতি চরমে পৌঁছয়। এই উত্তেজনা প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীর অভিযোগ, পুলিশের বাড়াবাড়ির জন্য এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কেউ কেউ আবার বলছেন, চাকরি বাতিল ইস্যু থেকে নজর ঘোরাতেই এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ভারতে প্রথম, বিশ্বে দ্বিতীয়! ধীরগতির শহরের তালিকায় লজ্জার রেকর্ড কলকাতার নামে
রাজ্যপালের নির্দেশ
জঙ্গিপুরের অশান্তি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিবৃতি দিয়ে রাজ্য প্রশাসনকে সতর্ক করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি জানিয়েছেন, “এভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো হিংসা বরদাস্ত করা উচিত নয়। যেভাবে শান্তিপূর্ণভাবে রামনবমী মিটল, তাতেই বোঝা গিয়েছে প্রশাসন হিংসা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম, মানুষও অশান্তি চায় না। শান্তি বিঘ্নিত করার যে কোনও চেষ্টা কঠোর হাতে দমন করা উচিত।” পাশাপাশি তিনি রাজ্যকে কড়া পদক্ষেপ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।