বন্দিদশা কাটতে পারে পার্থ, অর্পিতার! জেল থেকে ভিড় কমানোর নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

Published on:

supreme court partha arpita

শ্বেতা মিত্র, নয়া দিল্লি: অবশেষে দীর্ঘ বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেতে পারেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায় বলে মনে করা হচ্ছে। বিগত টানা ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতির জন্য প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি রয়েছেন দুজনে। একের পর এক শুনানি হলেও দুজনের মধ্যে কারোরই জেলমুক্তি হয়নি। তবে এবার সুপ্রিম কোর্টের তরফে এমন এক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রকে যারপরে মনে হচ্ছে এই দুজন সহ অনেকেরই জেলমুক্তি হতে পারে। আরও বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই লেখাটির ওপর।

জেল খালি করার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

WhatsApp Community Join Now

আসলে বাংলা সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যের জেলগুলিতে বন্দিদের সংখ্যা হু হু করে বেড়েই চলেছে। বন্দিদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা গুরুতর ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেল খাটছেন তো আবার অনেকেই আছে যারা অভিযুক্ত, কিন্তু দোষ প্রমাণিত হয়নি। আর এই নিয়েই এবার কার্যত উদ্বেগ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। আসলে সুপ্রিম কোর্ট যা বলেছে সেটা মূলত বিচারাধীন অবস্থায় যে সকল বন্দি রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে।

বিচারাধীন বন্দিদের একাংশের মুক্তির ব্যবস্থা করে জেল খালি করা যায় কি না, কেন্দ্রকে সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেছে দেশের শীর্ষ আদালত। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। এদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা মেনে বিভিন্ন রাজ্যকে নির্দেশ পাঠিয়েছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। এহেন  নির্দেশিকা আসতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে তাহলে কী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তার ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায় জামিন পাবেন?

জামিন পাবেন পার্থ-অর্পিতা?

জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যসচিব এবং জেল সুপারদের চিঠি পাঠিয়েছে। আর এই চিঠিতে চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হওয়া ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (বিএনএসএস)-র ৪৭৯ (১) ধারার উল্লেখ করা হয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী, ওই ধারার নিয়মকানুন মেনে বন্দিদের জামিনে মুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বিএনএসএস-র ৪৭৯ (১) ধারায় একটি নতুন নিয়ম যোগ করা হয়েছে। সেখানেই প্রথম বার কোনও অপরাধে অভিযুক্ত বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে নিয়মকানুন রয়েছে। প্রথম বার অভিযুক্ত কোনও বিচারাধীন বন্দি যদি সর্বোচ্চ কারাবাসের সাজার এক তৃতীয়াংশ সময় জেলে থাকেন, তা হলে তাঁর মুক্তির ব্যবস্থা করতে পারেন জেল সুপার। বন্দিরাও জামিনের জন্য আবেদন জানাতে পারেন। সেক্ষেত্রে বহু আইনজীবী মনে করছেন যে এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেন পার্থ অর্পিতা।

শীর্ষ আদালতের বিচারপতি হৃষীকেশ রায় এবং এসভিএন ভাট্টির বেঞ্চও বিচারাধীন বন্দিদের মুক্তির বিষয় পদক্ষেপ করারও নির্দেশ দিয়েছে। আইনজীবীদের কেউ কেউ মনে করছেন, ৪৭৯ (১) ধারার বিধি মেনে।পার্থ-অর্পিতাও জামিন পেতে পারেন।

কী বলছেন আইনজীবীরা?

এদিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের জামিন নিয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন আইনজীবীরা। হাই কোর্টের আইনজীবী তাপস ভঞ্জ  বলেছেন, “জেলে উপচে পড়া ভিড় কমাতে সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশ দিয়েছে। সব রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। আদালতের উদ্দেশ্য, বিচারাধীন বন্দিদের এক তৃতীয়াংশ কারাবাস সম্পূর্ণ হলে তাঁদের জামিনে মুক্ত করা। পার্থ চট্টোপাধ্যায় বা অর্পিতা মুখোপাধ্যায়রাও নির্দেশের ওই সুবিধা পেতে পারেন। তবে তাঁদের বিরুদ্ধে ক’টি মামলা রয়েছে। ওই মামলাগুলিতে সর্বোচ্চ কত বছর সাজা হতে পারে, তা বিবেচনা করে তাঁরা জামিন পেতে পারেন।”

এদিকে আইনজীবী সঞ্জয় বর্ধনও বলছেন, “বিনা বিচারে কাউকে দীর্ঘ দিন আটকে রাখা যায় না। দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত দোষী বলা যায় না। ” এদিকে বিশিষ্ট আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের মতে, “দু’জনের বিরুদ্ধেই  আর্থিক দুর্নীতি, প্রতারণার অভিযোগও। তাঁরা একাধিক অপরাধ করেছেন। দু’জনেই এসএসসি এবং প্রাথমিক দুই ক্ষেত্রেই দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত।” ফলে তাঁরা সহজে জামিন পাবেন না বলেই আইনজীবীর দৃঢ় বিশ্বাস।

সঙ্গে থাকুন ➥