বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: একটা সময় আসবে রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে যাবে মেট্রো! আর সেই সম্ভাবনাকে বাস্তব রূপ দিতেই জোর কদমে চলছে মেট্রো লাইন সম্প্রসারণের কাজ। নোয়াপাড়া থেকে ব্যারাকপুর পর্যন্ত মেট্রো (Noapara Barrackpore Metro) সম্প্রসারনের কাজও চলছে সেই পথ ধরেই। তবে সম্প্রতি এই লাইনে মেট্রোর কাজ করতে গিয়ে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে কর্মীদের।
ব্যারাকপুর পর্যন্ত মেট্রো লাইন বাড়ানোর কাজ শুরু হতে না হতেই বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে কলকাতা মেট্রো। নেপথ্যে বিটি রোডের নিচ থেকে যাওয়া জলের পাইপলাইন। হ্যাঁ, সূত্র বলছে, মেট্রো সম্প্রসারণের কাজ এগোলে পাইপ লাইনের চরম ক্ষতি হতে পারে। যার জেরে বন্ধ হয়ে যেতে পারে কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশের জল সরবরাহ। ফলত সবকিছু মাথায় নিয়েই ব্যারাকপুর মেট্রোর কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় কলকাতা পৌরসভা ও বেশ কয়েকটি সহযোগী সংস্থা।
বিটি রোডের পাইপলাইন সরিয়েই হবে মেট্রোর কাজ?
বিটি রোডের নিচে থাকা পাইপলাইন দিয়েই শহর কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। কাজেই মেট্রোর কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে গেলে ওই পাইপলাইন সরাতে হবে। যা একেবারেই সম্ভব নয়। ফলত, নোয়াপাড়া থেকে ব্যারাকপুর মেট্রো সম্প্রসারণের কাজ দ্রুত গতিতে চললেও বর্তমানে পাইপলাইন সমস্যায় ফাঁপরে পড়ে আটকে রয়েছে। সূত্র বলছে, মেট্রো সম্প্রসারণের জন্য যদি কোনও ভাবে পাইপ লাইনের ক্ষতি হয় সেক্ষেত্রে কলকাতা শহরের একটা বড় অংশের মানুষকে পানীয় জলের সাথে আপোষ করতে হবে।
গবেষণার দায়িত্বে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়
নোয়াপাড়া থেকে ব্যারাকপুর পর্যন্ত মেট্রো সম্প্রসারণের কাজ আপাতত পাইপলাইন সমস্যার কারণে প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে। এহেন আবহে বিটি রোডের জট কাটিয়ে ব্যারাকপুরের পথে মেট্রোকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব গিয়ে পড়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের কাঁধে। এ প্রসঙ্গে কলকাতা পৌরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, কঠিন পরিস্থিতি যাতে না আসে তার জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে বিষয়টি গবেষণার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ যাদবপুরের গবেষকরা ঠিক করবেন কীভাবে বিটি রোডের নিচে থাকা পাইপলাইনের ক্ষতি না করে মেট্রো সম্প্রসারণের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।
বিপদ এড়াতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন গবেষকরা
কলকাতা পৌরসভার নির্দেশে এবং কলকাতা মেট্রোর মদতে বিটি রোডের পাইপলাইন সমস্যা এবং ব্যারাকপুর পর্যন্ত মেট্রো সম্প্রসারণের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মহল। জানা গিয়েছে, এই পরীক্ষার ফল প্রকাশের ওপরেই নির্ভর করছে ব্যারাকপুর মেট্রোর ভবিষ্যৎ। সূত্র বলছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে নোয়াপাড়া থেকে ব্যারাকপুর পর্যন্ত মেট্রো সম্প্রসারণের কাজ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে কলকাতা পৌরসভা ও মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তবে আশঙ্কা একটাই, গবেষকরা যদি ফল প্রকাশে বিলম্ব করেন সেক্ষেত্রে ব্যারাকপুর পর্যন্ত মেট্রো সম্প্রসারণ নিয়ে জটিলতা বাড়তে পারে।
লাভ হবে যাত্রীদের
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের হাত ধরে যদি বিটি রোডের পাইপলাইন সমস্যার জট কাটে সেক্ষেত্রে ব্যারাকপুর পর্যন্ত মেট্রো-সম্প্রসারণের কাজ শুরু হবে জোর কদমে। আর একবার যদি এই কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়, তবে দমদম থেকে ব্যারাকপুর ও নোয়াপাড়া থেকে ব্যারাকপুর সকল যাত্রীদের জন্য নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। বলা হচ্ছে, নোয়াপাড়া থেকে ব্যারাকপুর পর্যন্ত মেট্রো সম্প্রসারণের কাজ শেষ হলে আখেরে লাভ হবে নিত্য অফিস যাত্রীদের। তবে সেই কাজ করতে হবে পাইপ লাইন সমস্যা এড়িয়ে শহর কলকাতায় পানীয় জলের ভারসাম্য বজায় রেখেই।