বাংলা পক্ষের ঘেরাওয়ে হল কাজ, চাপে ৫১ অস্থায়ী কর্মীকে পুনর্বহাল যাদবপুরের কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের

Published on:

bangla pokkho

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দেশে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে আচমকাই কর্মী ছাঁটাই এর প্রথা আজকের দিনে আর নতুন কিছু নয়। খবরের কাগজে প্রায়শই উঠে আসে এই ধরনের ঘটনা। তবে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা থেকে কর্মী ছাঁটাই এর অভিযোগের ঘটনা অবাক করল সকলকে। বছর শুরুর প্রথম দিনেই রীতিমত কর্মহীন পড়লেন ৫১ জন চুক্তিভিত্তিক কর্মী। কিন্তু বিক্ষোভ এবং চাপের মুখে পরে শেষ পর্যন্ত কর্মী ছাঁটাই রোধ হল।

রাতারাতি কাজ চলে যায় ৫১ জন অস্থায়ী কর্মীর!

WhatsApp Community Join Now

সালটা ছিল ১৯৩৫। বাংলার মাটিতে যাদবপুরে বাঙালি বিজ্ঞানী জে এন রায়ের হাতে গড়ে তোলা হয়েছিল বিখ্যাত জীববিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল বায়োলজি। আর এই কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানে মোট ৯৭ জন চুক্তিভিত্তিক কর্মী কাজ করতেন। এই কর্মীদের মধ্যে কারও চাকরির বয়স ৩০। তো কেউ আবার ২০ বছর ধরে চাকরি করছেন। সবই চলছিল ঠিকঠাক। কিন্তু এই আবহে আগের থেকে বিনা নোটিশে বছরের প্রথম দিনে কাজে গিয়ে সেই ৫১ জন চুক্তিভিত্তিক কর্মী জানতে পারেন যে তাঁদের ছাঁটাই করে দেওয়া হয়েছে। আর তাতেই মাথায় বাজ পড়ে চাকরিপ্রার্থীদের।

বিক্ষোভ মিছিলে সামিল গবেষকরা!

হঠাৎ করে আগে থেকে বিনা নোটিশে সংস্থার কর্তৃপক্ষের কর্মী ছাঁটাই কোনোভাবে মেনে নিতে চায়নি কেউই। তাই বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ বুধবার সকাল থেকে কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চের অধীনে এই প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টরকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ চলতে থাকে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, কর্মীদের ছাঁটাই করা চলবে না। পুনর্বহাল করতে হবে সকলকে। উপস্থিত ছিলেন বাংলা পক্ষর সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায়, সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি, শীর্ষ পরিষদ সদস্য অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক কুশনাভ মন্ডল, উত্তর ২৪ পরগনা গ্রামীণের জেলা সম্পাদক দেবাশীষ মজুমদার সহ বাংলা পক্ষর বড় সংখ্যক সদস্য সহযোদ্ধারা। আর এই বিক্ষোভ মিছিলে সামিল হন গবেষকরাও। আহত হন এক গবেষক।

কর্মী ছাঁটাইয়ের আসল কারণ কী?

সবমিলিয়ে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। আর এর মাঝেই ডিরেক্টরকে আটকানোর চেষ্টা করেন গবেষকরা। কারণ তিনি সেইসময় সেই বিক্ষোভ আন্দোলন থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। তখনই তাঁদের উপরে নিরাপত্তারক্ষীরা চড়াও হন বলে অভিযোগ ওঠে। জানা গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে ইউপি থেকে আসা বাংলা ও বিদ্বেষী ডিরেক্টর ইউপির বিভা ট্যান্ডন ডিরেক্টর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শুরু করেন বাংলা ও বাঙালি বিদ্বেষী নানা কর্মকাণ্ড। কথায় কথায় বাঙ্গালীদের কাম চোর, কেন মাছ খায় ইত্যাদি কটাক্ষ সহ বাংলার রাজ্য সরকারকে গালাগাল সহ নানা অপরাধমূলক কাজকর্মে লিপ্ত হয়। তাতেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

এই বিক্ষোভে পাশে থাকে বাংলা পক্ষও। বিষয়টি নিয়ে বাংলা পক্ষের শীর্ষ পরিষদ সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতিও নানা অভিযোগ করেন। অবশেষে বিক্ষোভকারীদের আন্দোলনের জেরে পুনরায় সেই ৫১ জন অস্থায়ী কর্মীকে কাজে ফেরানো হল। সূত্রের খবর, গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার রাতে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল বায়োলজি কর্তৃপক্ষ ৫১ জন চুক্তিভিত্তিক কর্তৃপক্ষকে কাজে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র তন্ময়।

সঙ্গে থাকুন ➥
X