প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত আগস্ট মাসে তিলোত্তমা কাণ্ডের জেরে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আরজি কর কাণ্ডের আঁচ ব্যাপকভাবে পড়েছিল। যার ফলে বহু মানুষ চিকিৎসার জন্য বাধ্য হয়ে বেসরকারি হাসপাতাল অথবা নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন। সেই সময় অনেকেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসা করিয়েছিলেন। আর ঠিক তখনই এই ব্যবস্থাকে কিছু অসৎ কাজে লাগিয়েছিল কয়েকজন। যার ফলে স্বাস্থ্য দফতরের সামনে নানান দুর্নীতির তথ্য উঠে আসে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Swasthya Sathi Card) ব্যবহার করে লক্ষাধিক টাকার বিল বাড়ানোর কথা জানা যায়। আর এবার সেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিল নবান্ন।
চালু করা হচ্ছে নয়া পরিষেবা
সূত্রের খবর, বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের ক্ষেত্রে নয়া ফরমান জারি করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। যেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য দফতরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাজ্যজুড়ে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে যুক্ত সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালে চালু করতে হবে ‘জিও ট্যাগিং’। লক্ষ লক্ষ টাকার বাড়তি বিল আটকাতেই এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাগশিপ প্রজেক্ট স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে রাজ্য স্বাস্থ্যদফতর আনল ‘জিও ট্যাগিং’ ব্যবস্থা। একনজরে দেখে নিন কীভাবে কাজ করবে এই ‘জিও ট্যাগিং’ ব্যবস্থা।
কী এই ‘জিও ট্যাগিং’ ব্যবস্থা?
জানা গিয়েছে, হাসপাতালে রোগী ভর্তি হওয়া মাত্রই অ্যাপের মাধ্যমে ওই রোগীর ছবি তুলে পাঠাতে হবে। অপারেশনের আগে, পরে এবং ডিসচার্জের সময় ছবি তুলে সমস্ত তথ্য পাঠাতে হবে। সেই তথ্য থাকবে রোগীর নাম, হাসপাতালের নাম এবং সেখানে থাকার দিনক্ষণ। এবং হাসপাতালের ঠিক কোন জায়গার ছবি তোলা হয়েছে, সেই তথ্যও দিতে হবে। আর ওই অ্যাপ চলবে শুধুমাত্র হাসপাতালের ৫০ মিটারের মধ্যে। সেক্ষেত্রে তথ্য যদি ভুল বা অসত্য হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও পদাধিকারীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। এক্ষেত্রে তথ্য বিবেচনা করার জন্য থাকবে TPA বা দায়িত্বপ্রাপ্ত এজেন্সি। যে বিবেচনা করবে রিয়েল টাইম এর ছবির সঙ্গে তথ্য মিলেছে কিনা।
আর এই সিস্টেমের উল্লেখযোগ্য বিষয় হল স্বাস্থ্যসাথীর প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হবে AI বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। যার মাধ্যমে এই সকল তথ্য যাচাই করবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে যুক্ত বেসরকারি হাসপাতাল/নার্সিংহোমে চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচারের সঙ্গে জড়িত চিকিৎসকদের সম্পর্কিত তথ্যও হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমগুলিকে জানাতে হবে। একবার যে তথ্য আপলোড হয়ে যাবে তা আর এডিট করা যাবে না।