২ মাসে দুই ধর্ষককে পৌঁছে দিয়েছেন ফাঁসিকাঠে, কে এই সরকারি আইনজীবী, রইল বিভাসের পরিচয়

Published on:

public prosecutor bivas chatterjee who handled joynagar and farakka rape case

পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ ধর্ষণের মত একটা জঘন্য অপরাধের জন্য দৃষ্টান্তমূলক ও কঠোর শাস্তির জন্য দাবি ওঠে প্রতিবারেই। কিন্তু মুশকিল হল বিচার পক্রিয়া শেষ হতে অনেকটা সময় লেগে যায়। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটে জয়নগর ও ফারাক্কা ধর্ষণকাণ্ডে। জয়নগরে মামলায় ৬২ দিনে ও ফারাক্কার ক্ষেত্রে ৬১ দিনের মধ্যেই শুনানি ও সাজা ঘোষণা হয়। কিভাবে এত দ্রুত বিচার সম্পন্ন হল কিভাবে এগোলো তদন্ত? স্বাভাবিকভাবেই কৌতূহল জেগেছে রাজ্যের বিভিন্ন স্তরের পুলিশের মনে।

২ মাসের মধ্যেই ধর্ষণ মামলায় রায় ঘোষণার দৃষ্টান্ত

WhatsApp Community Join Now

দুই মামলার ক্ষেত্রেই যেমন পুলিশের তদন্ত প্রশংসনীয় তেমনি সরকারি আইজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায়ের কৃতিত্বও রয়েছে। জয়নগর হোক বা ফারাক্কা উভয় ক্ষেত্রেই সরকারের তরফ থেকে আইনজীবী হিসাবে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।

দক্ষিণবঙ্গের ADG গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার জানান, ‘মামলাগুলোতে সরকারি আইনজীবী ছিলেন বিভাস চট্টোপাধ্যায়। উনি তদন্তের কাজে পুলিশকে যথেষ্ট সাহায্য করেন। তাঁর দৌলতেই দ্রুত মামলার নিস্পত্তি সম্ভব হয়েছে।’ স্বাভাবিকভাবেই এই মন্তব্যের পর অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগছে কে এই বিভাস চট্টোপাধ্যায়।

বিভাস চট্টোপাধ্যায়ের পরিচয়

যেমনটা জানা যাচ্ছে, উত্তর কলকাতার কাঁকুড়গাছির ফুলবাগান এলাকায় বড় হয়ে উঠেছেন বিভাস চট্টোপাধ্যায়। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের পড়াশোনা শেষ করেছিলেন ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ইনস্টিটিউশন থেকে। বরাবরই স্কুলে ফার্স্ট বয় ছিলেন তিনি, মাধ্যমিকেও ছিলেন সেরা ২০ এর তালিকাতেই। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে স্নাতক।

অবশ্য এখানেই শেষ নয়, সাইবার ফরেন্সিক নিয়ে ১১টি ইন্টারন্যাশনাল কোর্স করেছেন তিনি। লিখেছেন সাইবার ক্রাইমের উপর ৭টি বই। বিভাস চট্টোপাধ্যায়ের লেখা বই পড়ানো হয় বহু জায়গায়। এদিকে আইনে স্নাতক হওয়ার পর ২০০২ থেকে প্রাকটিস চালু, ২০১২ সালে যোগ দেন সরকারি আইনজীবী হিসাবে। ২০১৮ সালে বিদেশের কনফারেন্স বক্তৃতা দেওয়ার পর বহু চাকরির অফার মিলেছিল, কিন্তু তা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।

কীভাবে সম্ভব হল এত দ্রুত বিচার?

তাঁর মতে, আমি একটু পাগলাটে মানুষ। যেদিন থেকে আইনের ছাত্র হয়েছি একটাই লক্ষ্য মানুষের দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করা। আজও বহু গরিব মানুষকে বিচার পেতে কষ্ট সহ্য করতে হয়। পুলিশ যা তদন্ত করে আনে সেটাই এজলাসে সওয়াল করা হয়, কিন্তু এই গতানুগতিক ধারা ভেঙে চেয়ে সাক্ষ্য প্রমাণের সাথে প্রযুক্তির মেলবন্ধ ঘটাতে চেয়েছি। সেই কারণেই জয়নগর ও ফারাক্কার মামলায় দ্রুত বিচার সম্ভব হল।

জয়নগর মামলার ক্ষেত্রে গুগুল মাপের সাহায্যে অভিযুক্তদের মোবাইল টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে ডিজিটাল প্লটিং করা হয়। এরপর ড্রোন ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে ঘটনাস্থলে তাদের উপস্থিতি আদালতে প্রমাণ করা হয়। একইভাবে ফারাক্কার মামলাতেও ড্রোনের মাধ্যমে অভুযুক্তদের ঘটনাস্থলে উপস্তিত নিশ্চিত করা হয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে।

সঙ্গে থাকুন ➥
X