প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কয়েক দিন আগে ওয়াকফ ইস্যুতে এক ভয়ঙ্কর অশান্তির আবহ তৈরি হয়েছিল মুর্শিদাবাদে। আর এই অশান্তির আগুন ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়েছিল সুতি, ধূলিয়ান, সামসেরগঞ্জ-সহ একাধিক এলাকায়। বাড়ি ভাঙচুর থেকে শুরু করে পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো নিয়ে ব্যাপক হইহই শুরু হয়ে যায়। সবথেকে ভয়ঙ্কর অভিযোগ ওঠে জাফরাবাদে। সেখানে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। আর তাই নিয়ে সরগরম হয় রাজ্য রাজনীতি। মামলা ওঠে হাইকোর্টে (Calcutta High Court)।
হাইকোর্টের দ্বারস্থ নিহতদের পরিবার
যদিও এই মুহূর্তে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আছে পরিস্থিতি। গতকাল অর্থাৎ মুর্শিদাবাদে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এরই মধ্যে শোনা যায়, ওয়াকফ হিংসায় নিহত দুজনের স্ত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে। গত রবিবার রাতে বিধাননগর পূর্ব থানার ৪০ জন পুলিশ বিধাননগরের সেফ হাউসে যায়। সেখানে দরজা ভেঙে নিহতদের পরিবারের লোকজনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। সেই সময় পুলিশের দাবি, তাঁদের অপহরণ করা হয়েছে। অথচ নিহতদের পরিবারের লোকজনের দাবি, স্বেচ্ছায় বিধাননগরের সেফ হাউসে এসেছেন তাঁরা। এই মর্মে বিধাননগর পূর্ব থানার পুলিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে অতি সক্রিয়তার অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করার আবেদন জানান গতকাল।
মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি ঘোষ
এদিন মুর্শিদাবাদ-দাঙ্গায় জোড়া খুনে CBI তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে দ্বারস্থ হয় নিহতের পরিবার। সেই সময় মামলাকারীদের পাশে ছিলেন আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী ও আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। এবং গতকাল সেই মামলার আবেদনে অনুমতি দেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। কিন্তু আজ সেই মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। এবং কারণ হিসেবে জানালেন যেহেতু মুর্শিদাবাদ সংক্রান্ত সব মামলার শুনানি বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে চলছে। তাই এই মামলার শুনানিও ডিভিশন বেঞ্চেই হওয়া উচিত। মামলাকারীদের উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, “এই মামলায় এখন আর কিছু নেই। অপহরণ কোথায় হল? প্রধান বিচারপতির কাছে যান। উনি এই মামলা নতুন করে পাঠাবেন।”
আইনজীবীদের ধিক্কার বিচারপতির
এছাড়াও আইনজীবীদের ধিক্কার জানিয়ে বিচারপতি ঘোষ আরও বলেন যে, “এখন আইনজীবীরা নিজেদেরকে রাজনৈতিক মক্কেলদের সঙ্গে মিশিয়ে ফেলছেন। রাজনৈতিক নেতাদের মামলার কারণে রাজনৈতিক সমর্থনে বলীয়ান হয়ে উঠছেন। এটা দুর্ভাগ্যের। কিন্তু ভুলে যাচ্ছেন ওঁদের ক্ষমতার উৎস আদালতের বাইরে। আদালতের সামনেও সেই ক্ষমতা দেখাচ্ছেন। কোনও একটি দলের কথা নয়, সব দলের কথা বলছি।” এবং এই মন্তব্যের মাঝেই বিচারপতি ঘোষ বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং বলাইচন্দ্র রায়ের প্রসঙ্গও টানেন।
আরও পড়ুনঃ উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গে বাজবে সাইরেন! রইল বাংলায় মহড়া হওয়া ২৩ জেলার তালিকা
এদিন বিচারপতি ঘোষ বলেন, “রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত অন্য আইনজীবীদের দেখেছি। যার মধ্যে অন্যতম হলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং বলাইচন্দ্র রায়। আজ অবধি আদালতে তাঁদেরকে কোনো রাজনৈতিক আচরণ করতে দেখিনি। তবে বর্তমান পরিস্থিতি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কোনও রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলেই এভাবে আদালত চলতে পারে না। প্রত্যেক মামলার একটা রায় বেরোবে। আপিল কোর্টে যেতে পারেন। এদিকে গতকাল নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু সেখানে তাঁরা না থাকায় মমতা অভিযোগ তোলে যে বিজেপি নিহতদের পরিবারকে ‘অপহরণ’ করেছে।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |