সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সকালে কাজের উদ্দেশ্যে বাইরে বের হওয়া কিংবা সন্ধ্যায় ঘরে ফেরা, কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে (Kalyani Expressway) প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এবং যানবাহন চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ পথ। সম্প্রতি ছয় লেনের এই এক্সপ্রেসওয়ে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে, যা নদীয়া থেকে কলকাতাকে সংযুক্ত করার পথ আরো সুগম করে তুলবে।
তবে এখানেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। নতুন তৈরি হওয়া পানপুর টোল প্লাজায় (Panpur Toll Plaza) আদৌ টোল ট্যাক্স আদায় করা হবে কিনা এই নিয়ে। স্থানীয়দের দাবি, তাদের যেন এই টোল ট্যাক্সের বাইরে রাখা হয়।
টোল প্লাজা তৈরি হলেও সিদ্ধান্ত অনিশ্চয়তা
সোদপুরের মুড়াগাছা মোড় থেকে কাঁচরাপাড়া পর্যন্ত সম্প্রসারিত কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের মূল প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ। তবে এখনো মুড়াগাছা এবং ওয়্যারলেস মোড়ে নিকাশি পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে। তবে এরই মধ্যে পানপুর মোড়ে তৈরি হয়েছে নতুন টোল প্লাজা। কিন্তু এখান থেকে আদৌ টোল নেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে রাজ্য সরকারের পূর্ত দপ্তর এখনো কোনো রকম সিদ্ধান্ত নেয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করছে, যারা প্রতিদিন এই রাস্তা ব্যবহার করেন তাদের থেকে টোল ট্যাক্স নেওয়া উচিত নয়। কারণ তারা একাধিকবার এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন এবং প্রতিবার টোল দিলে তাদের আর্থিক খরচ বেড়ে যাবে।
জনপ্রতিনিধীরাও পাশে দাঁড়াচ্ছেন
স্থানীয়দের এই দাবিকে সমর্থন জানিয়ে ইতিমধ্যেই পাশে দাঁড়িয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। স্থানীয় বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম মনে করেছেন, মোটরবাইক ও স্কুটারের মতো দুই চাকার যানবাহনের জন্য টোল ট্যাক্স নেওয়া উচিত নয়। এছাড়াও এলাকার বাসিন্দাদের ব্যক্তিগত গাড়ির ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
আগেও ছিল টোল প্লাজা
ব্যারাকপুর ওয়্যারলেস মোড় পার করলে আগেও একটি টোলপ্লাজা চোখে পড়তো। তবে সেখানে টোল আদায়ের কাজ অনিয়মিতভাবে চলত এবং কিছুদিন পর তা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু সম্প্রসারিত কল্যাণী এক্সপ্রেক্সওয়ের ছয় লেন বিশিষ্ট রাস্তা চালু হওয়ার পর পানপুর মোরে আবারো টোল প্লাজা তৈরি করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠছে, এই প্লাজার কার্যকারিতা কেমন হবে?
পূর্ত দপ্তরের প্রতিক্রিয়া
রাজ্যের পুত্র সচিব অন্তরা আচার্য জানিয়েছেন, টোল নেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো রকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এটি রাজ্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার বিষয়। তবে তিনি আরো জানান যে, বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ে থেকে মুড়াগাছা পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার বাদ দিয়ে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের নতুন অংশ চালু করা হয়েছে। যেখানে বেশ কয়েকটি ওভারব্রিজ খুলে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ইলিশপ্রেমীদের জন্য সুখবর, কাকদ্বীপে ধরা পড়ল প্রচুর রুপোলী শস্য, দাম একদম কম
সরকার কী সিদ্ধান্ত নেবে?
বর্তমানে স্থানীয়দের দাবি এবং সরকারের পরিকল্পনার মধ্যে একরকম টানাপোড়েন চলছে। সরকার যদি টোল আদায় চালু করে তাহলে স্থানীয়দের বিক্ষোভ আরও বাড়বে। অন্যদিকে টোল বন্ধ থাকলে রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণের খরচ মেটানোয় সরকারের উপর চাপ পড়বে। এখন দেখার বিষয় রাজ্য সরকার কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করে।