প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: চলতি বছর মার্চ মাসে গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় এখনও শিহরিত হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য। আর এই ঘটনায় এখনও ঘরে-বাইরে চরম সমালোচনার মুখে পড়তে হয় কলকাতা পুরসভাকে (Kolkata Municipal Corporation)। তার জেরেই বেআইনি নির্মাণ রুখতে কড়া আইন আনার বিষয়ে মনস্থির করেছে পুরসভা কর্তৃপক্ষ। কোনো এলাকায় পুরসভার নিয়মবিধির বাইরে কোনো নির্মাণকার্য করলেই ভয়ংকর শাস্তির মুখোমুখি হতে হচ্ছে জনসাধারকে। এই আবহে সম্প্রতি ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ আসতেই বিল্ডিং বিভাগকে বড় নির্দেশ দিয়ে দিলেন ফিরহাদ হাকিম।
ঘটনাটি কী?
সম্প্রতি ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে কমন প্যাসেজ ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ করেন এক ব্যক্তি। জানা গিয়েছে, জোকা এলাকার ১৪২ নম্বর ওয়ার্ডে ঘটে সেই ঘটনা। সেখানে ওই ব্যক্তি জানান, কয়েকটি বাড়ির মাঝখানে কমন প্যাসেজে স্থানীয় এক জমির মালিক পাঁচিল তুলে দিয়েছেন। এদিকে বহু যুগ ধরে ওই রাস্তা দিয়ে এলাকাবাসী যাতায়াত করতেন। এখন হঠাৎ করে এই নির্মাণের জেরে সমস্যায় পড়েছেন বহু বাসিন্দারা। জমির মালিককে এই বিষয়ে জানানো হলে, তিনি পাল্টা দাবি করেন। কিছুতেই মানতে চান না তাঁদের সমস্যা। তাই কোনো সমাধান না পেয়েই এবার মেয়রের দুয়ারে এসে অভিযোগ করলেন তিনি। আর তার পরিপ্রেক্ষিতে এবার কমন প্যাসেজ ব্যবহার করা নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত বলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
আসলে এই কমন প্যাসেজ সাধারণত দেখা যায় কয়েকটি বাড়ির মাঝে আবার দু’টি বাড়ির মাঝে। সেই কমন প্যাসেজ ব্যবহার করতে দেখা যায় সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের। আর এবার ওই কমন প্যাসেজে কোনো নির্মাণকার্য করা যাবে না বলে বড় নির্দেশ দিলেন মেয়র। এমনকী কোনও জমিতেও যদি কমন প্যাসেজ থাকে তাহলে সেখানে কোনও নির্মাণ করা যাবে না বলে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিলেন তিনি। যদি কেউ এই নির্দেশ অমান্য করে থাকে তাহলে তা ভেঙে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। তাই সেক্ষেত্রে জোকা এলাকার থেকে আসা অভিযোগের ভিত্তিতে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বরো এক্সিকিউটিভ অফিসারকে কমন প্যাসেজে থাকা পাঁচিল ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন।
কী বলছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম?
এই প্রসঙ্গে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ‘কেউ দলিল করে কমন প্যাসেজ নিজের বলে দাবি করতে পারে না। আর যদি তা করে বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমোদন দেবেন না। কারণ ৩০–৪০ বছর ধরে ওই কমন প্যাসেজ ব্যবহার হয়ে সেটি অন্যান্য বাসিন্দাদের অধিকারের মধ্যে পড়ে যায়।” তিনি আরও বলেন যে “অনেক প্রোমোটার এখন সেগুলি দলিলের মধ্যে ঢুকিয়ে বিল্ডিং নির্মাণের অনুমোদন নিচ্ছেন। যদি দলিলের মধ্যে এসব থাকে তাহলে অনুমোদন দেবেন না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সেই ফাইল পাঠাবেন। সেখানে যা হওয়ার হবে।’”