ভাঁড়ারে মোটা ঘাটতি! পেনশনের টাকা থেকে বঞ্চিত কর্মীরা, বিরাট বিড়ম্বনায় কলকাতা পুরসভা

Published on:

kmc

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সামনেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তাই ২০২৬ এর নির্বাচন প্রস্তুতিতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি উঠে পড়ে লেগেছে। কিন্তু এই আবহে পুরসভার কর্মীরা বকেয়া বেতনের একের পর এক ঝামেলা ঝঞ্ঝাটের মুখে পড়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল কলকাতা পুরসভা। জানা গিয়েছে ইতিমধ্যে অবসরপ্রাপ্তদের মধ্যে মাত্র ৬০ শতাংশ কর্মী পেনশনের পাশাপাশি গ্র্যাচুইটি এবং কমিউটেশন পেয়েছিলেন। কিন্তু বাকি ৪০ শতাংশ কর্মী এবং চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত যাঁরা অবসর নিয়েছেন, তাঁরা প্রায় সকলেই সেই টাকা থেকে বঞ্চিত। এই নিয়ে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ।

কমছে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ

WhatsApp Community Join Now

হিসাবের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জানা গিয়েছে এখনও পর্যন্ত চলতি বছর ২০২৪ এ অবসর নেওয়া কর্মীদের পেনশন এর খরচ জোগাতে প্রয়োজন ১৫০ কোটি টাকা। শুধু তাই নয় গত দুই বছর ধরে ঠিকাদারদেরও পুরসভার থেকে পাওনা রয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এ বার পুরসভার রাজস্ব সংগ্রহের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় কম হওয়ায় ব্যাপক চিন্তার মধ্যে পড়েছে কলকাতা পুরসভা। তার অন্যতম প্রধান কারণ হল একাধিক বিভাগে সম্পত্তিকর-সহ বিভিন্ন কর আদায়ের পরিমাণ অনেকটাই কমেছে। ২০২৩ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজস্ব আদায়ের তুলনায় চলতি বছরে ওই একই সময়ে রাজস্ব আদায় কমেছে প্রায় ৭ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা। প্রতি বছর এইভাবেই কমছে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ। আর জমছে বকেয়া বেতন।

এদিকে পুর আধিকারিকদের অভিযোগ, দিনের পর দিন কলকাতা পুরসভার কোষাগার থেকে খরচের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। এককথায় আয় যতটা পরিমাণ বাড়ছে তার থেকে ব্যয়ের পরিমাণ ততটাই বেশি হচ্ছে। বকেয়া পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে পুরসভা। গত কয়েক বছর ধরে এখনও পর্যন্ত ঘাটতি বাজেটের পরিমাণ দু’হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। যার ফলে বাকি ৪০ শতাংশ কর্মী এবং চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত যাঁরা অবসর নিয়েছেন, তাঁরা প্রায় সকলেই সেই টাকা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

ক্ষুব্ধ পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা

ফেব্রুয়ারিতে অবসর নেওয়া এক কর্মী পুর পেনশন দফতরে বকেয়া পেনশন নিয়ে জানিয়েছেন, ‘‘স্ত্রী অসুস্থ থাকার কারণে প্রতি মাসে ওষুধের জন্য একগুচ্ছ টাকা খরচ করতে হয়। এখনও মেয়ের বিয়ে দেওয়া বাকি। জমানো টাকার মধ্যে অবসরকালীন থোক টাকাটা ভীষণ প্রয়োজন। কিন্তু কবে সেই টাকা পাবো জানি না।’’ অন্যদিকে আরও এক পুরকর্মীর অভিযোগ, ‘‘ ভাড়া বাড়িতে থেকে আসছি দিনের পর দিন। নতুন বাড়িতে যাওয়ার ইচ্ছা আছে। কিন্তু অবসরকালীন মোটা টাকাটা আটকে যাওয়ায় ইচ্ছাতে আপাতত লাগাম দিতে হচ্ছে। কিন্তু কবে পাব?’’

সঙ্গে থাকুন ➥
X