প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (Pradhan Mantri Awas Yojana) প্রকল্প নিয়ে বাংলায় বিস্তর দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসছে। এবং বিগত ২ বছর ধরে আবাস যোজনার টাকার হিসেবে ঠিকভাবে না মেলায় কেন্দ্র রাজ্যকে ওই খাতে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। বহু আবেদন করা হলেও কোনো সাহায্য আসেনি। অবশেষে এবার পশ্চিমবঙ্গে বাংলা আবাস যোজনায় পাকাবাড়ি তৈরির টাকা নিজেই দিতে চলেছে রাজ্য সরকার। টাকা দেওয়ার জন্য সমীক্ষার কাজ শুরু হলেও এক্ষেত্রেও উঠছে দুর্নীতির অভিযোগ। শাসকদলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে উঠে আসছে ভয়ংকর অভিযোগ। আর এই আবহেই এবার আবাস যোজনার বরাদ্দ টাকা প্রদানের ঘোষণা করল সরকার।
পিছিয়ে গেল আবাস যোজনার সমীক্ষা!
আবাস যোজনার ক্ষেত্রে এইমুহুর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল প্রকৃতপক্ষে যাদের পাকা ঘর জরুরি, তাদের টাকা পাইয়ে দেওয়া। এবং তালিকাকে ত্রুটিমুক্ত রাখা। সেই কারণেই নবান্ন বার বার তালিকা পরীক্ষার পথে হাঁটছে। গ্রাম সভা, ব্লক লেভেল কমিটি এবং ডিস্ট্রিক্ট লেভেল কমিটি এই তিনটি স্তরে শুরু হবে আবাস তালিকা অনুমোদন দেওয়ার কাজ। যা তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত করা হয়েছে। তার পরেই অর্থ বরাদ্দ প্রক্রিয়া শুরু হবে। আসলে এই আবাস প্রকল্পের সমীক্ষার কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ১৪ নভেম্বর। এবং ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে আবাস যোজনার টাকা দেওয়া শুরু হবে। কিন্তু এই সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে গত ১৮ নভেম্বর অর্থাৎ সোমবার।
কবে অ্যাকাউন্টে ঢুকবে টাকা?
তার জেরে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াই বেশ কিছুটা পিছিয়ে গিয়েছে। তাই জেলা প্রশাসনকে টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও তিনদিন বাড়তি সময় দেওয়া হয়েছে। যদিও তার আগেই তিনটি স্তরে শুরু হবে আবাসের তালিকার অনুমোদন দেওয়ার প্রক্রিয়া। এভাবে বাড়ি বাড়ি ঘুরে তালিকা প্রাথমিক ভাবে চূড়ান্ত করে ফেলতে হবে আগামী ২৮ নভেম্বরের মধ্যে। এরপর ২৯ নভেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই তালিকা ব্লক, এসডিও ও জেলা শাসকের অফিসে টাঙিয়ে রাখতে হবে। অর্থাৎ তালিকা নিয়ে কোনও আপত্তি থাকলে তা ওই সময়ের মধ্যে জানাতে হবে গ্রাহকদের। এরপরই আগামী ২৩ ডিসেম্বর এর মধ্যেই আবাস যোজনার টাকা বরাদ্দ শুরু করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আর এই আবহে বাংলায় আবাস যোজনা নিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের মধ্যে বার বার একটাই কথা উঠে আসছে। আর সেটি হল, রাজ্য স্তরে উপভোক্তাদের সরাসরি টাকা পাইয়ে দেওয়ার জন্য এর আগে এত বড় প্রকল্প চালু করেনি রাজ্য সরকার। এই তর্কে যদিও লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প এর নাম উঠে এলেও এই প্রথম কোন প্রকল্পে প্রথম কিস্তির টাকা হিসাবে প্রায় সাড়ে ১১ লক্ষ পরিবারকে ৬০ হাজার টাকা করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। যা রাজনীতির ইতিহাসে কেন্দ্র রাজ্য সংঘাতের আবহে একটি মাইলফলক বটে।