দুর্নীতি প্রাণ কাড়ল আরেকজনের! SSC পরীক্ষার আগের দিনই মৃত্যু চাকরিহারা শিক্ষকের

Published on:

Kolaghat

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: চাকরি হারিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের শিক্ষক সন্তোষ কুমার মণ্ডল। নিচ্ছিলেন দ্বিতীয়বার পরীক্ষার জন্য জোর প্রস্তুতি। কিন্তু শেষপর্যন্ত ভাগ্য সহায় থাকল না। এসএসসির একাদশ দ্বাদশ পরীক্ষার আগের দিন রাতে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়লেন কোলাঘাটের (Kolaghat) শিক্ষক। শোকাহত গোটা পরিবার প্রতিবেশী।

মানসিক অবসাদেই কি মৃত্যু?

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের আড়িশান্ডা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন সন্তোষ কুমার মণ্ডল। পাঁশকুড়ার শ্যামসুন্দরপুর পাটনা খাজুরি এলাকার বাসিন্দা হলেও চাকরি সূত্রে তিনি মেছোগ্রাম এলাকাতেই সপরিবারে বসবাস করতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নিয়োগে দুর্নীতির কারণে ২০১৬ সালের প্যানেলের চাকরি চলে যাওয়ার পর থেকেই চাকরিহারা হয়ে পড়েছিলেন সন্তোষবাবু। সংসার চালাতে তাই তখন টিউশানি শুরু করতেন। এবং দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য রাত জেগে পড়াশোনাও শুরু করেছিলেন। বেশ মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন তিনি। গত ৭ সেপ্টেম্বর নবম-দ্শম শ্রেণির পরীক্ষায় বসেছিলেন। প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার জন্যও। কিন্তু তার আগেই সব শেষ। অসুস্থ হয়ে হঠাৎ গত শনিবার রাতে মারা যান কোলাঘাটের চাকরিহারা শিক্ষক সন্তোষ কুমার মণ্ডল।

মৃত্যু নিয়ে কী জানাচ্ছে পরিবার?

পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার বাড়িতেই হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন সন্তোষ কুমার মণ্ডল। সঙ্গে সঙ্গে প্রথমে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতাল ও পরে অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় হাওড়ার নারায়না হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগ চাকরি হারানোর চাপেই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েছিলেন সন্তোষ কুমার মণ্ডল। এমনটাই দাবি করছেন পরিবারের লোকজন। স্বামীর মৃত্যুশোকে ভেঙে পড়েছেন তাঁর স্ত্রী। তিনি বলেন, ২০১৬ সালের প্যানেলের ক্যান্ডিডেট হিসেবে একশোর মধ্যে জায়গা ছিল। বাড়ি থেকে ১০ মিনিট দূরে চাকরি করতেন। চাকরি যাওয়ার পর ডিপ্রেশনে চলে যান। ঘুমাতেন না, খাওয়াদাওয়া করতেন না। অনেক বোঝাতাম ওঁকে। আমরা অন্যায়ের শিকার হলাম।”

আরও পড়ুন: পুজোর পরেই ফলপ্রকাশ SSC-র! ইন্টারভিউ প্যানেল শুরু হবে কবে থেকে? জানালেন ব্রাত্য

সন্তোষবাবুর প্রতিবেশী অঙ্কুশ অধিকারী বলেন, “ওঁর শরীর বেশ কিছুদিন ধরেই খারাপ ছিল। ওঁকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাই তখন ওঁর অবস্থা খুবই খরাপ ছিল। বিপি কমে গিয়েছিল। পেটে ব্যাথা-বমি ছিল। অপারেশন করা হলেও শেষপর্যন্ত ওঁকে বাঁচানো যায়নি। ডাক্তাররা বলেছেন ওঁর লার্জ ইন্টেসটিন ব্লাস্ট হয়ে গিয়েছিল। পেটের মধ্যে অনেকগুলো টিউমার ছিল। যখন থেকে চাকরি চলেগিয়েছিল তখন থেকে ভালো করে খেতেন না। তারই পরিণতি সন্তোষের।

সঙ্গে থাকুন ➥