কলকাতাঃ বাংলার ‘নির্ভয়া’ কাণ্ডে দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এক কথায় যত সময় এগোচ্ছে ততই আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় বিক্ষোভের মাত্রা আরও বাড়ছে। জায়গায় জায়গায় চলছে বিক্ষোভ, আন্দোলন। কিন্তু এত কিছুর মাঝেই এক চমকে দেওয়ার মতো প্রকাশ্যে উঠে এসেছে যা দেখে ও শুনে থ সকলে। আসলে আরজি কর-এর ঘটনার মাঝে দেশের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগের একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। যা দেখলে চমকে উঠবেন আপনিও।
রিপোর্ট ঘিরে শোরগোল
এখন আপনিও কি জানতে ইচ্ছুক যে এই রিপোর্টে কী আছে? তাহলে বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই লেখাটির ওপর। যে রিপোর্টটি প্রকাশ্যে এসেছে সেটি অনুযায়ী, এই মুহূর্তে দেশের মোট ১৫১ জন বিধায়ক এবং সাংসদের নামে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। আর এই তালিকাতেও এগিয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এছাড়া দলগত ভাবে বাম, কংগ্রেস, তৃণমূলের তুলনায় বেশি অপরাধের অভিযোগ রয়েছে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে। রয়েছে একাধিক ধর্ষণের অভিযোগ। স্বাভাবিকভাবেই এহেন রিপোর্ট দেখে চোখ কপালে উঠেছে সকলের।
১৫১ জন সাংসদ ও বিধায়কের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ
সম্প্রতি ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস’-এর তরফে একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। আর এই রিপোর্ট অনুসারে, ১৫১ জন বর্তমান সাংসদ ও বিধায়কের বিরুদ্ধে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা রয়েছে। বিজেপির এক-তৃতীয়াংশ সাংসদ বিরুদ্ধেই রয়েছে ভুরি ভুরি অভিযোগ। অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর) এবং ন্যাশনাল ইলেকশন ওয়াচের (এনইইউ) রিপোর্ট অনুযায়ী, ৪,৮০৯ জন বিধায়কের মধ্যে ৪,৬৯৩ জনের নির্বাচনী হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ৭৭৫ জন সাংসদের মধ্যে ৭৫৫ জন এবং ৪,৬৯৩ জন বিধায়কের মধ্যে ৪,০৩৩ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে।
মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলাগুলির মধ্যে রয়েছে মহিলার শালীনতা ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে তাকে লাঞ্ছিত করা বা অপরাধমূলক বলপ্রয়োগ, অপহরণ বা মহিলাকে তার বিবাহে বাধ্য করার জন্য প্ররোচিত করা, ধর্ষণ, নিষ্ঠুরতা, পতিতাবৃত্তির উদ্দেশ্যে নাবালিকা এবং কোনও মহিলার শালীনতার অবমাননা করার উদ্দেশ্যে শব্দ, অঙ্গভঙ্গি বা কাজ। এডিআরের রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যগত তালিকায় দ্বিতীয় অন্ধ্রপ্রদেশ (২১ জন) এবং তৃতীয় ওড়িশা (১৭ জন)। দলগত বিচারে যে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে, তাতে শীর্ষে দেশের শাসকদল বিজেপি। সাংসদ এবং বিধায়ক মিলিয়ে তাদের ৫৪ জন প্রতিনিধি নিজেদের নামে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলার কথা হলফনামায় স্বীকার করেছেন। রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, কংগ্রেস (২৩) ও টিডিপি (১৭), আপের ১৩ জন এবং তৃণমূল কংগ্রেসের ১০ জন বিধায়কের বিরুদ্ধে মহিলাদের সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ রয়েছে।
বাংলায় কাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে?
এখন আপনিও নিশ্চয়ই ভাবছেন যে বাংলার কোন কোন বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে? তাহলে দেখুন তালিকা…
- রানাঘাট উত্তর পূর্বের বিধায়ক অসীম বিশ্বাস।
কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়।
চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমান।
মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য।
বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর।
উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমান
বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ
পটাশপুরের বিধায়ক উত্তর বারিক।
পূর্বস্থলীর বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় ।
ফালাকাটার বিধায়ক দীপক বর্মন।
মুর্শিদাবাদের বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ।
ময়নাগুড়ির বিধায়ক কৌশিক রায়।
ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশরাম দাস।
দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ চন্দ্র ঘোরুই।
ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখা
কার্শিয়াং-এর বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা
বালিগঞ্জের বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়।
মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু
বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়।
ভাতারের বিধায়ক মনগোবিন্দ অধিকারী।
শমসেরগঞ্জের বিধায়ক আমিরুল ইসলাম।
হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম কুমার সরকার।
গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর।
রায়দিঘির বিধায়ক অলোক জলদাতা।