প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: চলতি বছর লোকসভা ভোটের অনেক আগেই কেন্দ্রীয় সরকার তার কর্মীদের একধাক্কায় মহার্ঘ ভাতা ৪ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছিল। যার ফলে DA এর পরিমাণ এসে দাঁড়িয়েছিল ৫০ শতাংশে। আর সম্প্রতি চলতি মাসেই ফের ৩ শতাংশ DA এর পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। অর্থাৎ এইমুহুর্তে কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মীদের DA এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৩ শতাংশ। এদিকে রাজ্য সরকার চলতি বছর লোকসভা ভোটে ভালো ফল পাওয়ার জন্য সরকারি কর্মীদের DA ৪ শতাংশ বৃদ্ধি করেছিল। যার দরুন বর্তমানে ১৪ শতাংশ করে মহার্ঘ ভাতা পাচ্ছেন রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা। কিন্তু তবুও অনেকটাই পার্থক্য থেকে যাচ্ছে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারী কর্মীদের DA এর ক্ষেত্রে। সেই কারণে কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতার দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন বহু সরকারি কর্মীরা।
এর আগে বেশ কয়েকবার, দীর্ঘদিন ধরেই ইউনিটি ফোরামের তরফ থেকে রাজ্যের ষষ্ঠ বেতন কমিশন সংক্রান্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার চেষ্টা করছিল। সরকারি কর্মীদের অভিযোগ ছিল যখন সরকারি মেমোতে ‘ষষ্ঠ বেতন কমিশনে’র উল্লেখ রয়েছে তখন সেই রিপোর্টটি একবার চাক্ষুষ করা। আর তাই এই আবহে সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন ইউনিটি ফোরামের আহ্বায়ক দেবপ্রসাদ হালদার RTI করে ষষ্ঠ পে কমিশনের সেই সুপারিশ বা রিপোর্টের কপি দেখতে চেয়েছিলেন। তবে বারবার আপিলেও সেই নথি দেখতে পায়নি ইউনিটি ফোরাম।
রাজ্য অর্থ দফতরকে চিঠি ফোরামের!
ফলে সমস্যা কোনোভাবেই মিটল না। শেষে জল এতটাই গড়িয়েছিল যে একটি মামলাও দায়ের হয় কলকাতা হাই কোর্টে। গত ২০২৩ সালের ৫ এপ্রিল কলকাতা হাই কোর্টে একটি মামলা করেন ইউনিটি ফোরামের আহ্বায়ক দেবপ্রসাদ হালদার। আর সেই মামলায় জয় পেয়েছিল সরকারি কর্মীদের সংগঠন। কিন্তু রিপোর্ট দেখানো হয়নি। এমনকি এর আগে ২০২২ সালের RTI করেও রাজ্য সরকারের থেকে রিপোর্ট দেখতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটি তখনও দেখানো হয়নি। অবশেষে ফের আরও একবার আইনজীবী প্রবীর চট্টোপাধ্যায় এর মাধ্যমে রিপোর্ট দেখতে চাওয়ার জন্য রাজ্য তথ্য কমিশনার, রাজ্য অর্থ দফতরকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
সরকারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি !
গত ২১ অক্টোবর পাঠানো সেই চিঠিতে ফোরামের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে আগামী তিনদিনের মধ্যে সরকারের থেকে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশের ফার্স্ট ও সেকেন্ড পার্ট দেখতে চেয়েছে ফোরামের আহ্বায়ক। নয়ত পরবর্তী আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দেখা হয়েছিল। অর্থাৎ হিসেবে অনুযায়ী গতকাল অর্থাৎ ২৪ অক্টোবরের মধ্যে সেই পে কমিশনের রিপোর্ট দেখাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু রিপোর্ট এখনও অধরা। এবার দেখার পালা কোন আইনি পদক্ষেপ নিতে চলেছে ফোরাম।