প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত ২০ জানুয়ারি শিয়ালদহ আদালত মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু আরজি কর মামলার শুনানির পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে, এই মামলার রায়ে তিনি একদমই খুশি নন। তাই পরের দিনই হাইকোর্টে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সঞ্জয় রায়ের ফাঁসির দাবি করেন। একই দাবি তোলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। গতকাল অর্থাৎ সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ডিভিশন বেঞ্চে হয় শুনানি।
কিন্তু এদিনের শুনানিতে আরজি কর ঘটনার এক নয়া মোড় নিল। শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস যেদিন দোষী সঞ্জয় রায়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন ফাঁসির বদলে, সেদিন রাজ্য সরকার এবং CBI এর মত নির্যাতিতার পরিবারও চেয়েছিল যে সঞ্জয়ের ফাঁসি হোক। কিন্তু গতকালের শুনানিতে তাঁদের দাবি সম্পূর্ণ উল্টে গেল। এদিন তিলোত্তমার পরিবার হাইকোর্টে জানিয়েছে, আপাতত সঞ্জয়ের ফাঁসি চায় না তারা। তবে এত কিছুর পরও অনেক প্রশ্নের উত্তর অধরা রয়ে গিয়েছে।
প্রধান বিচারপতিকে চিঠি
এদিন তিলোত্তমার বাবা-মা এজলাসে স্পষ্ট করে বলেন যে, রাজ্যের করা এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা কতটা, তা নিয়ে তাঁদের কিছু বলার নেই। কিন্তু তাঁরা এই মুহূর্তে সঞ্জয়ের ফাঁসির সাজা চাইছেন না। আপাতত এই মামলা গৃহীত হলে, তারপর তাঁরা বাকিটা বলবেন। এদিকে তিলোত্তমার বাবা-মা আগেও জানিয়েছিলেন যে, রাজ্য সরকারের তদন্তে তাঁদের ভরসা নেই। এমনকি গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য প্রমাণ লোপাটেরও অভিযোগ করেছিলেন তাঁরা। উঠে এসেছে একাধিক প্রশ্ন। তাই এবার সেগুলির উত্তরের দাবি জানিয়েই প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নাকে চিঠি দেওয়া হল আইনজীবী ও সমাজকর্মীদের একাংশ।
CBI এর তদন্ত নিয়ে ফের প্রশ্ন
জানা গিয়েছে এবার তিলোত্তমাকাণ্ডে পুনরায় শুরু থেকে তদন্ত চেয়ে আইনজীবী ও সমাজকর্মীদের একাংশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নাকে চিঠি পাঠিয়েছে। নিম্ন আদালতের রায়ে আরজি কর কাণ্ডে কলকাতা পুলিশের ভূমিকা ঘিরে উঠে এসেছিল একাধিক প্রশ্ন। পরে যদিও সেই তদন্তের ভার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে CBI-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁদের দাবি তদন্তভার CBI এর হাতে গেলেও, কলকাতা পুলিশের তদন্তের বাইরে CBI নাকি আর তদন্ত এগোয়নি। একই অভিযোগ তোলে তিলোত্তমার পরিবারও। তাই সেই সকল প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হয় বিচারককে।