প্রীতি পোদ্দার, মালদা: সম্প্রতি একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের শিক্ষার আরও উন্নতির স্বার্থে ট্যাব কেনার জন্য ‘তরুণের স্বপ্ন প্রকল্প’ (Taruner Swapna) এর মাধ্যমে নিয়ে টাকা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সেই অনুযায়ী এই প্রকল্পের ওপর ভিত্তি করে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয় রাজ্যে সরকারের তরফে। এর জন্যে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে পড়ুয়াদের তালিকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর-সহ রাজ্যে শিক্ষা দফতরে পাঠানো হলে সেই অনুযায়ী অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠায় সরকার। কিন্তু এই টাকা এক অ্যাকাউন্টের জায়গায় অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা চলে যাচ্ছে। যা নিয়ে বেশ বিক্ষোভ পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে কয়েকটি জেলার বিভিন্ন স্কুলে।
তদন্ত করতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ প্রশাসনিক আধিকারিকদের
রাজ্য সরকারের দেওয়া এই ট্যাবের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে চলে যাওয়ার ঘটনায় তদন্ত নামে প্রশাসনিক আধিকারিকরা। আর সেটা করতে গিয়েই গতকাল অর্থাৎ সোমবার প্রথমে মালদহের দুই স্কুলে যান প্রশাসনিক আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, হবিবপুরের কেন্দপুকুর হাই স্কুলে গিয়ে তদন্ত করেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বাণীব্রত দাস-সহ সরকারি আধিকারিকরা। অন্যদিকে হরিশ্চন্দ্রপুরের কনুয়া ভবানীপুর স্কুলে যান চাঁচলের মহকুমাশাসকের নেতৃত্বে পুলিশ ও শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা। কিন্তু সেখানে গিয়েই এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখে তদন্তকারীরা চমকে যান। দেখেন, অফিস ঘরে আলমারির নীচে অসংখ্য মদের বোতল।
গোটা বিষয় নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন প্রধান শিক্ষক
এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এইরকম মদের বোতল অফিস থেকে উদ্ধার করে বেশ ক্ষুব্ধ প্রশাসনিক আধিকারিকরা। তাই চাঁচলের মহকুমা শাসক শৌভিক মুখোপাধ্যায় স্কুলে দাঁড়িয়েই পুলিশকে মদের বোতল উদ্ধারের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেন। এবং তিনি বলেন, “স্কুলে মদের বোতল কীভাবে এল, সেই বিষয়ে পুলিশকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। আইন অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।” এদিকে গোটা বিষয় নিয়ে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজা চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি মদের বোতল প্রসঙ্গে মুখ খুলতে চাননি।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে অভিযোগ উঠেছিল যে পূর্ব বর্ধমানের ২৮ জন পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে না ঢুকে চলে গিয়েছে অন্য অ্যাকাউন্টে। তা নিয়ে বেশ শোরগোল পড়তেই নড়েচড়ে বসেছিল প্রশাসন। গতকাল বিকেলেই তাই এই বিষয় নিয়ে নবান্নে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। আর তার মধ্যেই পূর্ব বর্ধমানের ২৮ জন পড়ুয়া ট্যাবের টাকা ফিরে পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি বর্ধমান শহরে আরও কয়েকটি স্কুলের পড়ুয়াও টাকা পেয়েছে বলে জানিয়েছে জেলাশাসক আয়েশা রানি।