কলকাতাঃ আসছে দুর্গাপুজো। হাতে আর মাসখানেক সময়। ইতিমধ্যে বাংলার প্রতিটি কোণায় শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর প্রস্তুতি। তবে দুর্গাপুজো মানেই শহর কলকাতা। শহরের অন্যতম প্রাচীন ও জনপ্রিয় পুজোগুলির মধ্যে একটি হাতিবাগান সর্বজনীন দুর্গাপুজো। কিন্তু সম্প্রতি এই পুজো বন্ধের দাবিতে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন এলাকার কিছু স্থানীয় বাসিন্দা। এই বিখ্যাত পুজো বন্ধ করার জন্য একাধিক কারণ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন মামলাকারীরা।
মামলাকারী স্থানীয় বাসিন্দাদের একটি অংশের অভিযোগ, গত কয়েক বছর ধরে এই পুজো উপলক্ষে এলাকায় প্রবল যানজট, শব্দদূষণ ও অন্যান্য দূষণের মাত্রা বেড়ে গিয়েছে। বিশেষ করে প্যান্ডেল তৈরির সময় রাস্তা অবরুদ্ধ হওয়া, সাউন্ড সিস্টেমের উচ্চ শব্দ, এবং পুজোর অসংখ্য দর্শনার্থীর আগমন তাদের দৈনন্দিন জীবনে অসুবিধা সৃষ্টি করছে। এসব কারণেই কিছু স্থানীয়রা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে পুজো বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।
হাইকোর্টের এজলাসে হাতিবাগানের পুজো
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি হয়। এদিন এই বিশেষ মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের মহামান্য রাজর্ষি ভরদ্বাজের বড়তলা থানা ও দমকলকে তাদের বক্তব্য হলফনামা দিয়ে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। এলাকার মানুষের আপত্তি সত্ত্বেও কিভাবে প্যান্ডেল করার অনুমতি দেওয়া হল, তার কারণ ওই হলফনামায় উল্লেখ করার নির্দেশও দেন মহামান্য বিচারপতি। তিনি জানান যে এরকম করে প্যান্ডেল হলে স্থানীয় মানুষ অসুবিধার সম্মুখীন হবেন। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১২ ই সেপ্টেম্বর।
পুজো কমিটির দাবি, অযৌক্তিক মামলা
হাতিবাগান সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি এই মামলাকে ‘অযৌক্তিক’ এবং ‘অসাংবিধানিক’ বলে উল্লেখ করেছে। তাঁদের মতে, এই পুজো শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি অঙ্গ। এছাড়া, পুজো কমিটি দাবি করেছে যে তারা পূজা উপলক্ষে সব ধরনের আইন মেনে চলেছেন এবং পরিবেশ সংক্রান্ত সমস্ত নির্দেশিকা পালন করছেন। এছাড়াও অনেক বাসিন্দা মনে করেন, পুজো বন্ধ করা হলে এটি শুধু ঐতিহ্যের ক্ষতি হবে না, বরং এলাকার ব্যবসায়িক দিকটিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।