প্রীতি পোদ্দার, কালিয়াচক: এই মুহূর্তে দুর্গাপুরে (Durgapur) এক মেডিকেল ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্য জুড়ে। ওই নির্যাতিতা পড়ুয়া ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা ৷ অভিযোগ, গত শুক্রবার অর্থাৎ ১০ অক্টোবর রাতে তাঁর এক সহপাঠী বন্ধুর সঙ্গে মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাস বাইরে ঘুরতে যান ওই তরুণী ৷ সেই সময় হঠাৎ করেই ৫ জন নির্যাতিতাকে জঙ্গলে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। পুলিশ নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ইতিমধ্যেই রেকর্ড করা হয়েছে তাঁর বয়ান। আর সেই বয়ানে নির্যাতিতা নাকি জানিয়েছেন যে, তাঁকে গণধর্ষণ নয়। একজনই ধর্ষণ করেছে। আর এই ঘটনার তদন্তে এবার সেই ধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্তের তালিকায় নাম উঠে এল মালদার কালিয়াচকের ছেলে ওয়াসিফ আলির।
ধর্ষণকাণ্ডে গ্রেপ্তার মালদার ছেলে
নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী মোট ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। এবং নিরপেক্ষ এবং সঠিক পুলিশি তদন্তে তদন্তের ভিত্তিতে সব মিলিয়ে ৫ জনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে নির্যাতিতা জানিয়েছেন যে, একজনই তাঁকে ধর্ষণ করেছে। এমতাবস্থায় দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারি পড়ুয়ার ধর্ষণ কাণ্ডে নাম জড়িয়ে পড়েছে মালদার কালিয়াচকের ছেলে ওয়াসিফ আলির। তাকে ধর্ষণ কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বলে দিই, ওয়াসিফ আলি নির্যাতিতার সহপাঠী। এই খবর জানতে পেরেই জোর চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে কালিয়াচকের সিলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাহাদুর এলাকায়। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর মেধাবী ছেলে এ রকম অপরাধে যুক্ত থাকতে পারেন, তা মেনে নিতে পারছেন না স্থানীয়রা।
অবাক স্থানীয়রা
স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, কালিয়াচক থেকে বৈষ্ণবনগর যাওয়ার পথে ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের এক পাশেই ওয়াসিফ আলিদের বাড়ি। সিলামপুর স্ট্যান্ডের কাছে তাঁদের ব্যবসা। তাঁর বাবা আনিসুর রহমান পেশায় হার্ডওয়্যার এবং আম ব্যবসায়ী। পাশাপাশি মাছের বড় ব্যবসা রয়েছে। বাড়ির ছোট ছেলে ওয়াসিফ। তিন দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে অনেকদিন আগে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে ওয়াসিফের বাবা আনিসুর রহমান এক সময়ে সিলামপুর-১ পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। পরে আর রাজনীতি করতেন না। এরপর ওয়াসিফ মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের একটি মাদ্রাসায় বড় হন। পরে দুর্গাপুরের আইকিউ সিটি মেডিক্যাল কলেজে সুযোগ পান। সেখানেই তিনি দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন। কোনওদিন কারও সঙ্গে অভদ্র আচরণ করেনি সে। তাই তাঁকে গণধর্ষণ কাণ্ডে ফাঁসানো হয়েছে কিনা একমাত্র পুলিশি তদন্তের মাধ্যমে উঠে আসবে।
আরও পড়ুন: ‘৫ হাজার কোটি টাকা কেলেঙ্কারি!’ উত্তরবঙ্গ ত্রাণ তহবিল গঠন নিয়ে বিস্ফোরক সুকান্ত
ক্ষুব্ধ কলেজের পড়ুয়ারা
এদিকে ঘটনার পরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে কলেজের পড়ুয়ারা। তারা নিরাপত্তার দাবিতে রীতিমত অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছেন। বিক্ষোভে ঘেরাও করে রাখা হয় কলেজের অধ্যক্ষকে। শুধু পড়ুয়া নয় এর পাশাপাশি বাম কর্মী সমর্থকরাও কলেজে বিক্ষোভ দেখান। সিপিআইএম-এর কর্মীরা কলেজ চত্ত্বরে ঢুকতে গেলে নিরাপত্তরক্ষীদের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি বাধে। তৈরি হয় প্রবল উত্তেজনা। কিন্তু এত কিছুর মাঝেও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে সমাজে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে।