প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাতারাতি প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি চলে যাওয়ায় রীতিমত বেসামাল হয়ে উঠেছে সরকার। পরে শিক্ষা ব্যবস্থার কথা মাথায় রেখে এবংরাজ্যের আবেদনের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট চাকরিহারা শিক্ষকদের আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু সেই নির্দেশ গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-র জন্য জারি করা হয়নি। তাই এবার শিক্ষাকর্মীদের জন্য এক বড় পদক্ষেপ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার।
বৈঠকে নেওয়া হল বড় সিদ্ধান্ত
কিছুদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নবান্নে থেকে ঘোষণা করেছিলেন যে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি শিক্ষাকর্মীদের, SSC মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের মাসিক ভাতা দেওয়া হবে। সেই সময় বলা হয়েছিল গ্রুপ সি কর্মীদের মাসিক ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে। আর এবার সেই ঘোষণা নিয়ে এক বড় আপডেট দিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, আজ, বুধবার, রাজ্যে মন্ত্রিসভার বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। অবশেষে এই বৈঠক শেষে মমতা খোদ জানিয়ে দিলেন যে শ্রম দফতরের অধীনে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সেই প্রকল্পের মাধ্যমেই এবার ভাতা দেওয়া হবে।
চালু হল এক নয়া স্কিম
২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর নিয়োগ হয়েছিল। সেই নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে গোটা প্যানেলই বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। চাকরি গিয়েছে কয়েক হাজার শিক্ষাকর্মীরও। তাঁদের জন্যই ভাতা ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “ কিছু অনিবার্য পরিস্থিতিতে শিক্ষাকর্মীদের বেতন হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওযায় তাই ওয়েস্ট বেঙ্গল লেবার ডিপার্টমেন্টের আওতায় ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভলি হুড অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি নামে একটি স্কিম চালু হতে চলেছে। আর সেই প্রকল্পের ভিত্তিতে এবার এপ্রিল থেকে প্রতিমাসে গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের যথাক্রমে ২৫,০০০ ও ২০,০০০ টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: অথৈ জলে ১০০ দিনের কাজের ভবিষ্যৎ! মামলা ছাড়লেন হাইকোর্টের আরেক বিচারপতি
বিরোধীদের কটাক্ষ
এদিন এই নয়া প্রকল্পের সূচনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, “ওদেরও তো সংসার রয়েছে। ওদেরও তো বেঁচে থাকতে হবে। তাই যতক্ষণ না পর্যন্ত মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে এবং যতক্ষণ না পর্যন্ত সমস্যার সমাধান হচ্ছে ততক্ষণ আমাদের সরকার এই অনুদান দিয়ে যাবে।” এছাড়াও এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন যে, “কেউ কেউ বলবে দরকার নেই, এটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। তবে আমাদের সরকার সবার কথা ভাবে, তাই এই সিদ্ধান্ত।” তিনি এদিন বিরোধীদের কটাক্ষ করে বলেন যে, “এখানে তো অনেকে খেতে দেওয়ার মুরোদ নেই, কিল মারার গোঁসাই! তাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অনুদানের স্কিম চালু করলাম।”
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।