প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: প্রথম থেকেই নানা সরকারী প্রকল্প নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রের সংঘাত চলে আসছে। পরিস্থিতি এমন আকার ধারণ করেছে যে দুই বছর ধরে বিভিন্ন খাতে রাজ্যকে বরাদ্দ পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। যা নিয়ে বিভিন্ন সভা মিছিলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা। আর এই আবহেই রাজ্যে অর্থ কমিশনের বৈঠকে আধাআধি করের দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নবান্নে অর্থ কমিশনের বৈঠক
সূত্রের খবর, ষোড়শ অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান অরবিন্দ পানগড়িয়ার নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করা হয় নবান্ন সভাঘরে। জানা গিয়েছে এদিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ নবান্নে পৌঁছন দিল্লি থেকে আসা প্রতিনিধিরা। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে বৈঠক। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন আরও ১২ জন মন্ত্রী। ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। সিপিএমের তরফে ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং পলিটব্যুরোর সদস্য রামচন্দ্র ডোম। কংগ্রেসের প্রতিনিধি হিসাবে গিয়েছিলেন সুখবিলাস বর্মা। বিজেপির তরফে বৈঠকে হাজির ছিলেন দুই বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ এবং দীপক বর্মণ।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নালিশ অর্থ কমিশনের কাছে
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বৈঠকে রাজ্যের বকেয়া পাওনার দাবিতে সরব হয়েছেন। এছাড়াও কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়েও তুলেছেন একাধিক প্রশ্ন। তাঁর মতে, কেন কেন্দ্রীয় সরকার তাদের পছন্দ মতো রং ব্যবহারের জন্য চাপ দিচ্ছে? এবং তা হচ্ছে না বলে টাকা আটকে রেখেছে। তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ৬০ শতাংশ অর্থ কেন্দ্রীয় সরকার দিলেও, রাজ্যকে ৪০ শতাংশ অর্থ দিতে হয়। তারপরেও একতরফাভাবে রাজ্যকে বঞ্চনা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য থেকে নিয়ে যাওয়া কেন্দ্রীয় করের ভাগের ৫০ শতাংশ দাবি করেছে। এতদিন এই করের ৪১ শতাংশ রাজ্য পেত।
একইভাবে তাঁরাও করের অর্থের ৪১ শতাংশের বদলে ৫০ শতাংশ টাকা দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন বিরোধী দলের একাংশ। কমিশনের তরফে জানানো হয়, এখনও পর্যন্ত ১৩ টি রাজ্যে সকলেই কমবেশি এই দাবি তুলেছে। এই সবই তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানাবেন। অন্যদিকে কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগ শুনে অর্থ কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা শুধুমাত্র করের অর্থের বিষয়টি দেখভাল করেন। কেন্দ্রীয় বকেয়া বা কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত টাকা রাজ্যকে দেওয়া তাঁদের আওতাভুক্ত নয়। তবে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের এই বার্তা পৌঁছে দেবেন বলে আশ্বাস দেন প্রতিনিধিরা।












