প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বিশাল চাপের মুখে পড়ে গিয়েছে রাজ্যের শিক্ষক মহল। দীর্ঘ ১ বছরের টানাপড়েনের পরে গত ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে যে ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগের (SSC Case) প্যানেল বাতিল করা নিয়ে গত বছর এপ্রিলে কলকাতা হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তা বহাল রাখা হচ্ছে। এদিকে রায় শুনতেই হইহই রব। চারিদিকে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ মিছিল। শেষে এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি খানিক মোকাবিলা করার জন্য গতকাল অর্থাৎ সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে চাকরিহারাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
চাকরিহারাদের জন্য এবার বিশেষ টাস্কফোর্স!
আসলে ২০১৬ র প্যানেলে যোগ্য-অযোগ্য বাছার জন্য দীর্ঘ সময় দেওয়া হলেও পরে কিছুতেই সেটি সম্ভব হচ্ছে না বলে ২০১৬-র এসএসসি নিয়োগের (SSC Case) সম্পূর্ণ প্যানেলই বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এরপরেই জীবনে অন্ধকার নেমে আসে রাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর। সরকারি চাকরি হারিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে পড়েন তাঁরা। গণ আত্মহত্যার হুমকি উঠে আসে চাকরিহারাদের তরফ থেকে। শেষে গতকালের বৈঠকে এই জটিল সমস্যার কয়েকটি সমাধানের পথ বের করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘক্ষণ চলে সেই বৈঠক। এদিন মমতা বলেছেন, ‘‘আমার জীবন থাকতে কোনও যোগ্যের চাকরি যেতে দেব না।’’ কারা অযোগ্য, তাঁদের কেন অযোগ্য বলা হচ্ছে, আদৌ তাঁরা অযোগ্য কি না, সবটাই রাজ্য সরকার খতিয়ে দেখবে বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন। আর তখনই উঠে আসে টাস্কফোর্স প্রসঙ্গ।
এক্স হ্যান্ডেলে কী বলছেন কুণাল ঘোষ?
এদিন চাকরিহারাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের কয়েকঘণ্টা পর এক্স হ্যান্ডেলে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ লিখেছেন, আইনি প্রক্রিয়ায় যাতে কোনো রকম বিলম্ব না হয় তা নিয়ে নজরদারির জন্য মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে টাস্ক ফোর্স গঠন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।” যদিও এই টাস্কফোর্স গঠন সংক্রান্ত তথ্য খোদ গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে নেতাজি ইন্ডোরের সভায় সবিস্তারে বার্তা দিয়েছিলেন। জানা গিয়েছে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এর নেতৃত্বে বিশেষ এই টাস্ক ফোর্স গড়ে দিয়েছেন তিনি। তাতে থাকছেন শিক্ষাসচিব, আইনজ্ঞ, শিক্ষকদের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
টাস্কফোর্সের কার্যকারিতা কী?
এছাড়াও কুণাল ঘোষ তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে চাকরিহারাদের জন্য নির্মিত এই বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠনের কার্যকারিতাও তুলে ধরেছিলেন। তিনি লিখেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী আইনি পথে চাকরিহারাদের জন্য যে প্রক্রিয়া শুরু করেছেন, তাতে যাতে কোনো বিলম্ব না হয়, সেই লক্ষ্যে দ্রুত কাজ করা যায়, তা মনিটর করবে এই টাস্ক ফোর্স। মুখ্যমন্ত্রী আন্তরিকভাবে বিপন্নদের জট কাটানোর কাজ দ্রুত করার জন্য টাস্ক ফোর্সকে নির্দেশ দিয়েছেন।” এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে এই জটিল সমস্যার সমাধানে আইনজীবীদের প্যানেল তৈরি করলেন। পাঁচজন আইনজীবীর নামও ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুনঃ ৩২ হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ এখন বিচারপতি তপোব্রতর হাতে, হাইকোর্টে শুনানি কবে?
জানা গিয়েছে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি, কপিল সিব্বল, রাকেশ দ্বিবেদী, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত ভূষণ এই পাঁচ আইনজীবী রাজ্যের হয়ে লড়বেন। এছাড়াও এদিন চাকরি বিক্রি হওয়া থেকে শুরু করে নিয়োগ দুর্নীতি সম্পূর্ণ যে তাঁর আড়ালেই হয়েছে সেটা বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যোগ্য শিক্ষকদের চাকরি যাতে কোনওভাবেই না যায়, তার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব তাই সরকারের। অন্যদিকে চাকরিহারা শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে তাঁদের বিদ্যালয়ে যোগদান করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |