‘বাঁধ ভেঙে দিন!’ পাহাড়েও ম্যানগ্রোভ রোপণের কথা মমতার

Published:

Mamata Banerjee
Follow

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: লাগাতার বৃষ্টির জেরে ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের মুখে উত্তরবঙ্গ। এর আগে একাধিকবার প্রকৃতির চন্ডীরূপ দেখেছিল গোটা রাজ্য। উত্তরাখণ্ড হোক কিংবা উত্তরবঙ্গ কেউই রেহাই পায়নি এই সংকট থেকে। তাই এবার প্রকৃতির রুদ্র রূপ সামাল দিতে বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পাহাড়ে দুর্যোগ সামাল দিতে এবার প্রকৃতিকে রক্ষার ডাক দিলেন তিনি।

প্রকৃতিকে সঙ্গে নিয়ে চলার পরামর্শ মমতার

আজ, বুধবার মুখ্যমন্ত্রী বিপর্যয় নিয়ে দার্জিলিংয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেন। সেখানে ভারী বৃষ্টির জেরে উত্তরবঙ্গের ক্ষতির তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বৃষ্টি বিপর্যয়ে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। উত্তরবঙ্গে মোট ৩২ জন মানুষ এই বিপর্যয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। বৃষ্টি-ধস, ও হড়পা বান ভাসিয়ে দিয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহারের একাধিক এলাকা। বিপর্যয়ের পর থেকেই প্রশাসন ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা ত্রাণ ও উদ্ধারকাজের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে না হয় তার জন্য প্রকৃতিকে সঙ্গে নিয়ে চলার পরামর্শ দিলেন তিনি।

পাহাড়ে লাগানো হবে ম্যানগ্রোভ গাছ!

এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক সভার বৈঠকে সাফ জানান, “কংক্রিটে আর কাজ হবে না। প্রকৃতি দিয়ে প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে। পাহাড়ি নদীর পাড়ে এবার লাগাতে হবে ম্যানগ্রোভ আর ভেটিভার। সুন্দরবনের মতই এবার পাহাড়েও গড়ে তোলা হবে প্রাকৃতিক বাঁধ।“ আসলে ম্যানগ্রোভ মূলত নোনা জলে বেড়ে ওঠা গাছ, যা উপকূলীয় এলাকাকে সুরক্ষা দেয় এবং বড় ধরনের ঝড় বা জলোচ্ছ্বাসেও বাঁধের মতো কাজ করে। ভেটিভার একধরনের গভীর শিকড়বিশিষ্ট ঘাস, যা মাটি ক্ষয়ের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সাধারণত ম্যানগ্রোভ যেখানে বন তৈরি করে, ভেটিভার সেখানে সহায়ক উদ্ভিদ হিসেবে ভূমিকা নেয়। সেই কারণেই বড় বড় ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব থেকে রক্ষা পেয়ে চলেছে দক্ষিণবঙ্গ। এবার সেটাই হতে চলেছে উত্তরবঙ্গে।

প্রশ্ন উঠছে একাধিক!

বুধবার দার্জিলিংয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন যে, “আপনারা যদি গঙ্গাসাগরে ৫ কোটি গাছ লাগাতে পারেন, তাহলে উত্তরবঙ্গের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতেও লাগানো যাবে না কেন? কংক্রিট ছয় মাসেই ভেঙে যায়। কিন্তু গাছ লাগালে তা অনেক বেশি টেকসই। জলে টাকা ঢেলে আর চলবে না। স্থায়ী সমাধান করতে হবে।” কিন্তু পরিকল্পনা আওড়ালেও উপায় নিয়ে চলেছে একাধিক প্রশ্ন। কারণ, ম্যানগ্রোভ সাধারণত লবণাক্ত মাটিতে জন্মায়, পাহাড়ি ভূপ্রকৃতিতে তা আদৌ টিকবে কি না, তা হলে কীভাবে নির্মাণ করা হবে প্রাকৃতিক বাঁধ। যদিও এই নিয়ে প্রশাসনিক মহলে কোনও স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে ডিভিসি-র জল ছাড়ার ভূমিকা নিয়েও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: পানীয় জল সংকট! কুলটিতে ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচি বন্ধ করল গ্রামবাসীরা

বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় DVC কে নিশানা করে বলেন যে, “২০ বছর ধরে ড্রেজিং করেনি ডিভিসি। মাইথন, পাঞ্চেত, ফরাক্কা, হলদিয়া—সব জায়গায় অবস্থা এক। বর্ষায় জল ছাড়বে, গ্রীষ্মে জল মিলবে না, এ কেমন নীতি? এভাবে চলতে থাকলে ড্যাম ভেঙে দিন, নদীকে তার স্বাভাবিক পথে চলতে দিন।” পাশাপাশি জলনির্গমনের সঠিক ব্যবস্থাপনায় ভুটানের জল ছাড়ার ক্ষেত্রেও ব্যর্থতা তুলে ধরেছেন মমতা। কেন্দ্রকে সরাসরি নিশানা করে প্রশ্ন তোলেন, “ভুটানের জল আমাদের ভাসিয়ে দেবে, আর ওরা ক্ষতিপূরণ দেবে না? হোয়াই উই সাফার এভরিটাইম?”

গুরুত্বপূর্ণ
Join
চাকরির খবর
Join
রাশিফল
Join
খেলার খবর
Join