প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সোমবার রাত থেকে এক নাগাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টির জেরে কলকাতা এবং শহরতলিতে কোমর সমান জল হয়ে গিয়েছে। রাস্তাঘাট, বাইক, সাইকেল গাড়ি সবকিছুই এখন জলের তলায়। উত্তর থেকে দক্ষিণ একটানা বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে কলকাতার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এদিকে বিভিন্ন গলিপথও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সব রাস্তায় আগে কখনও জল জমেনি, সেই রাস্তাও জলের তলায়। তার উপর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এমতাবস্থায় CESC কে সরাসরি দায়ী করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
CESC-র প্রতি ক্ষুব্ধতা প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর
রিপোর্ট অনুযায়ী এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার বৃষ্টি দুর্যোগ নিয়ে জানিয়েছেন যে, “আমি এমন বৃষ্টি কখনও দেখিনি। দুর্যোগ মোকাবিলায় তিনি প্রতিনিয়ত কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। স্কুল ছুটি দেওয়ার পাশাপাশি অফিসেও কর্মীদের প্রয়োজন ছাড়া না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘শুধু মঙ্গলবার নয়, বুধবারও অফিস না যাওয়াই ভাল।’ এদিকে রাতভর ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত কলকাতার বিভিন্ন অংশ। এখনও পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অন্তত ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। তাই মেয়র ফিরহাদ হাকিমের মতোই সকলকে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
মৃতের পরিবারকে চাকরি দেওয়ার দাবি মমতার
এদিকে বহু জায়গাতেই দেখা গিয়েছে বিদ্যুতের খোলা তার পড়ে রয়েছে জলমগ্ন রাস্তায়। এই বিষয়ে প্রশ্ন উঠতেই সিইএসসি-র পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, “এর দায় CESC-কে নিতে হবে। এখনই তারা জরুরি ভিত্তিতে কর্মীদের নামাক।” এছাড়াও বেসরকারি ওই বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাকে তোপ দেগে মমতা বলেন, “এখানে ব্যবসা করছে। আর পরিকাঠামো আধুনিকীকরণের কাজ করছে রাজস্থানে। এখানে কোনওরকম আধুনিকীকরণের কাজ করছে না। বলতে বলতে আমার মুখ ব্যথা হয়ে গিয়েছে। সিইএসকি-কে তাঁদের পরিবারের এক জনকে চাকরি দিতে হবে। আমি এটা পরিষ্কার বলে দিচ্ছি। ” তবে এই প্রসঙ্গে CESC কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো কথা বলেননি।
আরও পড়ুন: দুর্যোগের জেরে আজ কোনও পুজো উদ্বোধন করবেন না মুখ্যমন্ত্রী, জানালেন কুণাল ঘোষ
ফারাক্কার ড্রেজিং নিয়ে প্রশ্ন মমতার
ধীর গতিতে জল নামা নিয়ে ফরাক্কা বাঁধযে দোষারোপ করা হয়েছে। সেখানে ঠিকভাবে ‘ড্রেজিং’ না-হওয়া নিয়ে অভিযোগ করেন তিনি। তাই কমছেই না জলস্তর। তাই গঙ্গায় জোয়ার এলে শহরের একাংশ জলমগ্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও জেলা এবং শহরতলিতে অপেক্ষাকৃত কম বৃষ্টি হলেও প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে বলে জানান তিনি। পুজোর আগে ক্ষয়ক্ষতি নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।