প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সময় যত এগোচ্ছে আরও রণক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ। ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারির পর থেকেই হিন্দু ধর্মে আগুন যেন জ্বলে উঠেছে বাংলাদেশ। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার। আলাদা করে টার্গেট হচ্ছেন ইসকনের সদস্যরা। এই অবস্থায় ইসকনের ৫৪ জন সদস্যকী গতকাল বৈধ উপায়ে বেনাপোল সীমান্ত হয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাঁদের আটকে দেয় বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন পুলিশ। সেখানকার ইমিগ্রেশন বিভাগের আধিকারিক ইমতিয়াজ আহসানুল কাদের ভুঁইয়া জানান, ইসকন সদস্যদের কাছে বৈধ পাসপোর্ট, ভিসা থাকলেও বিদেশে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষ সরকারি অনুমতি ছিল না। এদিকে পশ্চিমবঙ্গের বুকেও হিংসার আগুন জ্বলছে। তাই এবার কেন্দ্রের সঙ্গে হাত মেলাল রাজ্য সরকার।
বাংলাদেশ ইস্যুতে কেন্দ্রকে সমর্থন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আরও এক বার দল এবং সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বৃহস্পতিবারই দিল্লিতে বাংলাদেশ ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশে তৃণমূল কংগ্রেসের থাকার স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে যা হচ্ছে তা কোনওভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এটা আন্তর্জাতিক ইস্যু। তাই কেন্দ্রীয় সরকার যে অবস্থান নেবে তৃণমূল তাকেই সমর্থন করবে দেশের স্বার্থে।” আর সেই একই সুর শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে। এবার বিধানসভায় বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন তিনিও।
কী বলছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
সূত্রের খবর, আজ বিধানসভা অধিবেশনের প্রথমার্ধ্বেই যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে। আর সেখানেই ওঠে বাংলাদেশ এর প্রসঙ্গও। এদিন তিনি বলেন বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা যেন রাষ্ট্রসংঘে উত্থাপন করে কেন্দ্রীয় সরকার। শীঘ্রই পড়শি দেশে রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব যেন পেশ করে কেন্দ্রীয় সরকার তাই নিয়ে আর্জিও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি মনে করেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ শান্তিরক্ষা বাহিনী মোতায়েন করা দরকার কারণ যে পরিস্থিতি বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে তা সামলানোর ক্ষমতা নেই মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের। এছাড়াও বাংলাদেশে যে ভারতীয়রা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের এই রাজ্যে ঠাঁই দিতে তৈরি আছে রাজ্য সরকার।
এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, “প্রধানমন্ত্রী যদি এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করলে বিদেশমন্ত্রী যেন এ বিষয়ে সংসদকে জানান। যদি এই ঘটনা চলতেই থাকে তাহলে, আমাদের লোককে ফিরিয়ে আনতে চাই। একবেলা খাব, দরকারে একটা রুটি ভাগ করে খাব। আমাদের লোক অত্যাচারিত হোক তা চাই না।” এই প্রসঙ্গেই তাঁর সংযোজন, “আমাদের পরিবার, সম্পত্তি এবং প্রিয় মানুষেরা বাংলাদেশে আছেন। ভারত সরকার এই বিষয়ে যে অবস্থান নেবে, আমরা তা গ্রহণ করব। কিন্তু বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে ধর্মীয় কারণে কেউ অত্যাচারিত হলে আমরা তার নিন্দা জানাই। আমরা এই বিষয়ে ভারত সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করার আর্জি জানাচ্ছি।”