প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বেশ কয়েকদিন ধরে জলের পাইপ লাইন বসাতে রাস্তা খোঁড়া হচ্ছে। যার ফলে যানবাহন চলাচলে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এমনকি এই কাজ শেষ হতেও বেশ সমস্যা হচ্ছে বলে বড় অভিযোগ উঠে আসছে। শুধু এই এক সমস্যা নয়। এই অবস্থায় আবার আর একটি বিভাগ রাস্তা সারাই করতে এসে জলের পাইপ লাইন ফাটিয়ে দিচ্ছে। আর ফলে সেখানকার মানুষদের যাতায়াতের সমস্যার পাশাপাশি পোহাতে হচ্ছে জলের সমস্যাও। আর সেগুলি মেরামত করতে এবার রাজ্য সরকারের খরচও বাড়ছে। তাই সেই নিয়েই এবার বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই দিলেন কড়া বার্তা।
অফিসারদের ওপর ক্ষুব্ধ মমতা
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবান্নে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কর্তারা। শুধু তাই নয় সঙ্গে ছিল প্রতিটি জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপাররা। প্রশাসনের এক দফতরের সঙ্গে অন্য দফতরের সমন্বয় না থাকাতেই বাড়তি খরচ পোহাতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। আর তাতেই বেশ ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই এদিন বৈঠকে সরকারি কাজে যুক্ত অফিসারদের ধমকের সুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, “সরকারের টাকা আপনাদের কেন গায়ে লাগে না? মনে রাখবেন, এটা তো জনগণের টাকা। সেই টাকা কেউ অপব্যবহার করুক, এটা আমি কিছুতেই টলারেট করব না। যে ডিপার্টমেন্ট এটা ভাঙবে তার হেড থেকে হেড ক্লার্ক সকলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।”
গ্রামীণ রাস্তায় বড় গাড়ি যাতায়াত বন্ধের নির্দেশ মমতার
সরকারী আধিকারিকদের ধমক দেওয়ার পাশপাশি এদিন পুলিশ সুপারদেরও কড়া নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘ জনগণের টাকা দিতে রাজ্য সরকার নিজের খরচে পথশ্রী প্রকল্পের রাস্তা করেছে। কেন অপব্যবহার হবে? যে দফতর এটা মানবে না তার প্রধান থেকে শুরু করে হেডক্লার্ক পর্যন্ত আইনত ব্যবস্থা করা হবে। এখন থেকে গ্রামীণ রাস্তায় বড় গাড়ি যাবে না। আমরা নিজের খরচে রাস্তা করছি। কিছু লোক টাকার লোভে সেই রাস্তা দিয়ে বড় গাড়ি যাতায়াতের অনুমতি দিচ্ছে। ফলে ওই রাস্তাগুলি ভেঙে যাচ্ছে। পাশপাশি একই গ্রামে এক একজন ঠিকাদার একাধিক প্রকল্পে একাধিক জায়গায় কাজ করছে। একটা প্রকল্পের কাজ শেষ না করেই আর একটা প্রকল্পে ঢুকে যাওয়াটা কোনোভাবেই বরদাস্ত করবে না সরকার।’
প্রসঙ্গত, এদিনের বৈঠকে বাংলাদেশের ঘটনা নিয়েও পুলিশ সুপারদের সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “জেলায় জেলায় বাংলাদেশ নিয়ে ফেক ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে। এবং মানুষকে নানাভাবে এইসব ভিডিও দেখতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। আর ফলে হিংসার আঁচ যেন ছড়িয়ে পড়েছে। তাই সাইবার ক্রাইম বিভাগকে আরও সক্রিয় হতে হবে। এই ধরনের ফেক ভিডিও যে বা যারা বানাচ্ছে তাঁদের চিহ্নিত করে বড় পদক্ষেপ নিতে হবে।”