প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: উৎসবের মরসুম হোক কিংবা দুর্যোগ সর্বসাধারণের সুবিধার এবং স্বাস্থ্যের কথা ভেবে রাজ্য সরকার প্রায় সময়ই কন্ট্রোল রুম খুলে থাকেন। সাধারণ দুটি শিফটের মাধ্যমে নবান্নের এই বিশেষ কন্ট্রোল রুম পরিচালন করা হয়ে থাকে। প্রথম শিফট শুরু হয় সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা। তারপর দ্বিতীয় শিফট শুরু হয় রাত ৮টা থেকে সকাল ৮টা। দু’টি শিফটে ২৪ ঘণ্টা একজন করে ডব্লুবিসিএস অফিসারের নেতৃত্বে পরিচালিত হয় নবান্নের বিশেষ কন্ট্রোল রুম। কিন্তু এবার সেই পরিচালন ব্যবস্থায় গাফিলতির অভিযোগ উঠে এসেছে। ক্ষুব্ধ মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ (Manoj Pant)।
আধিকারিকের কাজ নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যসচিব
বর্তমান পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, গণশিক্ষা সম্প্রসারণ ও গ্রন্থাগার সেবা দপ্তরের যুগ্ম সচিব আশিস কুমার সাহা কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর শিফটের টাইম ছিল সকাল ৮ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত। কিন্তু সেই আধিকারিক গত শনিবার সকাল ৮টার বদলে বেলা সাড়ে ১১টায় কাজে যোগ দেন। শুধু তাই নয়, ডিউটি টাইম যেখানে রাত ৮ টায় শেষ হওয়ার কথা সেখানে অফিস থেকে তিনি বেরিয়ে গিয়েছেন বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ। আর এরইমধ্যে ঘটল আরও এক বিপত্তি। ওইদিনই সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে কন্ট্রোল রুমের ল্যান্ডলাইনে রাজ্যের সার্বিক পরিস্থিতি জানার জন্য ফোন করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। কিন্তু ততক্ষণে সেই আধিকারিক চলে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হন তিনি।
আধিকারিককে শোকজ নবান্নর!
এরপর, কন্ট্রোল রুম থেকে এক সিভিল ডিফেন্স ভলান্টিয়ার আশিস কুমার সাহা নামের আধিকারিককে ফোন করে। কিন্তু তিনি জানান, তাঁর শিফট শেষ হয়ে গিয়েছে। পরের শিফটের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেয়। এইভাবে কাজের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ায় বলে ওই বিসিএস অফিসারের বিরুদ্ধে খবর পৌঁছয় মুখ্যসচিবের দপ্তরে। তারপরই সমস্ত দিক বিবেচনা করে কর্মীর গাফিলতির অভিযোগে গণশিক্ষা সম্প্রসারণ ও গ্রন্থাগার সেবা দপ্তরের যুগ্ম সচিব এবং কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা আশিস কুমার সাহাকে শোকজ করে নবান্ন। শোকজের চিঠিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, যেই টাইমে কন্ট্রোল রুমে কর্মরত থাকার কথা ছিল আশিসবাবুর, তিনি সকাল সাড়ে ১১টায় কাজে যোগ দিয়ে সাড়ে ৫টায় বেরিয়ে গিয়েছেন। এই অবস্থায় তাঁর বিরুদ্ধে কেন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার কারণ দর্শাতে বলেছে নবান্ন।
আরও পড়ুন: ‘দেরি হলেই পদক্ষেপ!’ উত্তরবঙ্গে বিজেপি সাংসদকে মারধর কাণ্ডে রাজ্যের রিপোর্ট তলব স্পিকারের
উল্লেখ্য, উৎসব মরশুমে সাধারণের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য এই বিশেষ কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। জানা গিয়েছে এটি সরাসরি মুখ্যসচিবের নজরদারিতে চলছে। তার উপর উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছেই। এমতাবস্থায় কোনও অফিসারের কাজে গাফিলতির বিষয়টি একেবারেই মেনে নিতে চাইছে না কেউই। তাই অভিযুক্ত আধিকারিককে শোকজ চিঠির ভিত্তিতে জবাব জানানোর জন্য আগামীকাল অর্থাৎ ৮ অক্টোবরের মধ্যে তাঁকে লিখিত আকারে উত্তর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে ওই আধিকারিকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো কথা বলতে চাননি।