ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা, কিছুতেই হচ্ছে না স্ক্যান! মেট্রোর QR কোডের টিকিটে বাড়ছে যাত্রী দুর্ভোগ

Published on:

Metro Tickets

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দীর্ঘ বছর ধরে কলকাতা শহরে ‘লাইফলাইন’ হিসাবে পরিষেবা দিয়ে চলেছে মেট্রো। যাত্রীদের সুবিধার্থে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েই চলেছে তাঁরা। আগে মেট্রোর মাধ্যমে যাতায়াত করার ক্ষেত্রে টিকিট (Metro Tickets) হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকত প্লাস্টিকের টোকেন। কিন্তু সম্প্রতি ডিজিটাল যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ নিয়ে এসেছে কিউআর‑কোডযুক্ত কাগজের টিকিট। আর তাতেই এবার বেশ সমস্যায় পড়েছে যাত্রীরা।

টোকেনের পরিবর্তে কাগজের টিকিট!

দীর্ঘদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে যে বেশ কয়েকটি মেট্রো স্টেশনে যাত্রীদের প্লাস্টিকের টোকেন দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এবং তার পরিবর্তে চালু করা হয়েছিল কিউআর কোড বিশিষ্ট কাগজের টিকিট (Metro Tickets)। যার ফলে একদিকে যেমন প্লাস্টিকের টোকেন চুরি রোধ করা গিয়েছে ঠিক তেমনই প্লাস্টিকের টোকেনের পরিবর্তে কাগজ ব্যবহার করায় মেট্রো কর্তৃপক্ষের আর্থিক ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু সুবিধার জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও নয়া এই পদ্ধতিতে বেড়েই চলেছে যাত্রী ভোগান্তি। ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়েও কিছুতেই স্ক্যান হচ্ছে না টিকিট।

ভোগান্তির মুখে যাত্রীরা!

প্রতিদিনের ব্যস্ত সময়ে মেট্রো সফরগুলিতে এইরকম নিত্যদিন অভিযোগ উঠে আসছে যে টিকিট ঠিকভাবে স্ক্যান করা হচ্ছে না। যার ফলে প্ল্যাটফর্মে ঢোকা এবং বেরোনোর ক্ষেত্রে অহেতুক দেরি হচ্ছে। এদিকে তাড়াহুড়োর মধ্যে ট্রেন যেমন হাতছাড়া হচ্ছে, তেমনই স্টেশনগুলিতে ঢোকার মুখে যাত্রীদের ভিড় জমছে। প্রত্যেকদিনই শোনা যাচ্ছে একাধিক অভিযোগ। একই ভাবে, যাত্রীদের বেরিয়ে আসার পথে কিউআর কোডের টিকিট কাজ না করায় ভিড় চলমান সিঁড়ি ছুঁয়ে ফেলছে। আর তাতেই জটলা বাড়ছে এবং ধাক্কাধাক্কিতে দুর্ঘটনার পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।

পুরোনো ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবি যাত্রীদের!

ইতিমধ্যেই রবীন্দ্র সরোবর, রবীন্দ্র সদন, ময়দান, এসপ্লানেড স্টেশনের উত্তর প্রান্ত, চাঁদনি চক স্টেশনের দক্ষিণ দিক,মহাত্মা গান্ধী রোড-সহ একাধিক মেট্রো স্টেশনে এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কর্তৃপক্ষ আগে যেখানে দাবি জানিয়েছিল যে স্মার্ট গেট দিয়ে মিনিটে ৪৫ জন যাত্রী বেরোতে পারেন কিউআর কোডযুক্ত টিকিট আসায় বাস্তবে সেখান দিয়ে মিনিটে আট থেকে দশ জন যাত্রী বেরোতে পারছেন। যার দরুন যাত্রীদের একমাত্র দাবি, মেট্রোয় যেন পুরোনো টোকেন ব্যবস্থা ফিরে আসে।

আরও পড়ুন: চোরের রাজপ্রাসাদ, রয়েছে বাথটাব থেকে ঝাড়বাতি! ডায়মন্ড হারবারে আজব কীর্তি

প্রসঙ্গত, শুধু মেট্রোর টিকিট নিয়েই যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তা নয়, তার সঙ্গে এখানে কর্মী সংখ্যাও দিন দিন কমছে। যা নিয়ে এবার প্রতিবাদের হুঁশিয়ারি দিল কলকাতা মেট্রোর প্রগতিশীল কর্মচারী ইউনিয়নের সহ-সভাপতি শুভাশিস সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘সারা দেশ যখন কাগজবিহীন অফিসের দিকে এগোচ্ছে, তখন কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ পিছন দিকে হাঁটছেন। যাত্রীদের জন্য পরিষেবা উন্নত করতে শুধু যন্ত্র নয়, কর্মীও দরকার। আমরা আরও কর্মী নিয়োগ করার দাবি জানিয়েছি।’’

সঙ্গে থাকুন ➥