শ্বেতা মিত্র, মালদাঃ টানা বৃষ্টি এবং ভয়াবহ বন্যার জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দক্ষিণবঙ্গের একাংশ শুধু দক্ষিণবঙ্গ বললে ভুল হবে টানা বৃষ্টির জেরে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে উত্তরবঙ্গেরও একের পর এক জেলা। অন্যদিকে বাংলার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ডিভিসি থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় সরকারকে লাগাতার নিশানা করে চলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে বাংলা নেতা-মন্ত্রীরা। কেন বাংলা ডুবেছে? এই প্রশ্ন তুলে বারবার সরব হয়েছেন সকলে। এদিকে একদিকে যখন জল বাড়ছে তখন জায়গায় জায়গায় ত্রাণ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। তবে সেই ত্রাণই নাকি শেষমেষ লুট হয়ে গেল!
ত্রাণ চুরি
সম্প্রতি মালদায় গিয়ে ত্রাণ বিলি করে এসেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু তারপরেই একি কাণ্ড! সরকারের তরফে বিলি করার ত্রাণ যেন হরিলুটের বাতাসার মতো লুট হয়ে গেল। বস্তা বস্তা চুরি হয়েছে গিয়েছে ত্রাণের জিনিস। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে মালদা জেলার মানিকচকের ভূতনিচরে।
ঘটনাস্থলে ফিরহাদ হাকিম
মানিকচকের ভূতনিচর থেকে শুরু করে গোপালপুরের নানা জায়গা বন্যার জলে ডুবে গিয়েছে। আর এহেন বন্যা পরিস্থিতি খরিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে ত্রাণ নিয়ে হাজির হন ফিরহাদ হাকিম। মন্ত্রী নিজেই শুরু করেন ত্রাণ সামগ্রী বিলি করার কাজ। এরপর বৃষ্টি নামতেই বেঁধে যায় গন্ডগোল। লরির উপর উঠে বেশ কয়েকজন ত্রাণ সামগ্রী লুঠ করে বলে অভিযোগ।
এই লুট হয়ে যাবার কারণে বহু মানুষ ত্রাণ না নিয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রবল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ফিরহাদ হাকিম জানান, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ত্রাণ নিয়ে এসেছি। আরও সাহায্য পাবেন দুর্গতরা। কিন্তু কেন্দ্র কোনও দায়িত্ব পালন করেনি। কেন্দ্রের অসহযোগিতা এবং টানা বর্ষণে ভাঙন রোধের কাজ করতে পারিনি। কিন্তু বন্যাকবলিত মালদহের মানিকচক এবং ভূতনিচরবাসীর পাশে আমরা আছি।”
লুট হয়ে গেল সরকারি ত্রাণ!
আজ রবিবার উত্তরবঙ্গ সফরে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্লাবিত কয়েকটি এলাকায় পরিদর্শনে যেতে পারেন তিনি। যদিও সবটা নির্ভর করে পরিস্থিতির ওপর বলে খবর। এদিকে ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশে জায়গায় জায়গায় পর্যাপ্ত ত্রাণ পাঠাতে বলা হয়েছে। কিন্তু সেই প্রাণ এলাকায় পৌঁছানো মাত্র হাতে হাতে লুট করা হয়। শনিবার দুপুরে মালদার ভুতনি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। উত্তরবঙ্গে টানা বৃষ্টিতে জায়গায় জায়গায় জল বেড়ে গিয়েছে। যে কারণে নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে বহু মানুষকে ত্রাণ শিবিরে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়েছে এদিকে এই ত্রাণ শিবিরগুলিতে সরকারি ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে।
বন্যার কবলে উত্তরবঙ্গ
জানা গিয়েছে, আজ বিকেল নাগাদ একাধিক জেলার দুর্যোগ পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং থেকে শুরু করে কালিম্পঙ জেলার পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ হয়ে গিয়েছে। এদিকে টানা বৃষ্টিতে তোর্সা, কালজানি রায়ডাক, সংকোশ, তিস্তা সহ সহ উত্তরবঙ্গের বেশিরভাগ নদী বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে।