প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ইতিমধ্যেই নির্ধারিত সময়ের আট দিন আগেই কেরলে পৌঁছে গিয়েছে বর্ষা। তার উপর বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে উঠছে। হাওয়া অফিসের শেষ আপডেট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় এই নিম্নচাপ আরও শক্তি বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। যার জেরে অতি প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বঙ্গে। তবে এবার শিয়ালদহ ডিভিশন (Sealdah Division) রেল সংক্রান্ত বড় পদক্ষেপ নিল।
দুর্যোগ রুখতে শিয়ালদহ ডিভিশনের বৈঠক
এদিকে বঙ্গে বর্ষা ঢুকলেই, টানা ঝড়-জলে একেবারে নাজেহাল অবস্থা তৈরি হয়। রাস্তাঘাটে জল জমে যেমন দুর্যোগ পোহাতে হয় ঠিক তেমন ভাবেই রেল লাইনেও জল জমে নানা ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাই এই সমস্যা যাতে চলতি মরশুমে যাত্রীদের পোহাতে না হয় তার জন্য এবার বড় ব্যবস্থা নেওয়া হল। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে গতকাল অর্থাৎ বুধবার, শিয়ালদহ ডিভিশনের DRM-এর নেতৃত্বে এক জরুরি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বর্ষার সময় যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং ট্রেন পরিষেবার স্বাভাবিকতা বজায় রাখার জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ
- ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বৃষ্টিতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে সেখানে ডিজেল জেনারেটর বসানো হয়েছে। এছাড়াও রেল ট্র্যাকে যদি জল জমে যায় তাহলে জলজট প্রতিরোধ করতে এবং দ্রুত জল নিষ্কাশনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পাম্প বসানো হয়েছে।
- রেল যাত্রীদের এবং রোলিং স্টক-এর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে RPF সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকবে। সেক্ষেত্রে ঝড় জলের সময় তাঁদের জন্য ৮০০টি বৃষ্টিরক্ষা স্যুট বরাদ্দ করা হয়েছে। যা ইতিমধ্যেই সুরক্ষা কর্মীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
- বৃষ্টির সময় যাতে ট্রেনের কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি না দেখা যায় তাই ইলেকট্রিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং ও সিগন্যাল-টেলিকম সরঞ্জামের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
- টানা ২৪ ঘণ্টার জন্য চালু থাকবে একটি এমার্জেন্সি কন্ট্রোল সেল, যেখানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের অফিসাররা উপস্থিত থাকবেন। বৈঠকে এইমুহুর্তে অপারেটিং, ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল, সিগন্যাল ও টেলিকম বিভাগের অভিজ্ঞ কর্মীদের নির্বাচন করা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নজরদারি করাটা জন্য।
- খারাপ আবহাওয়ার সময় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ওভারহেড ইকুইপমেন্ট-এর রক্ষণাবেক্ষণে বিশেষ জোর দিতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টাওয়ার ওয়াগন প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
- কাঁচড়াপাড়া, রানাঘাট, বহরমপুর, ব্যারাকপুরসহ বিভিন্ন রুটে ঝড়-বৃষ্টিতে ট্রেন চলাচল পড়ার সময় রেল ট্র্যাকে যাতে গাছ পড়ে না থাকে তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গাছ কাটার কাজ যাতে দ্রুত করা হয় তার জন্য নজরদারি চালানো হচ্ছে। এছাড়াও ক্যানিং ও ডায়মন্ড হারবার-এর মতো ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকাগুলিতে বিশেষ নজরদারি থাকবে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নিয়মিত মনসুন পেট্রোলিং চালানো হবে।
- অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও জলজটের ফলে ট্র্যাকে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। তার জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা পরিষ্কার ও সঠিকভাবে পরিচালনা করার উপর নজর রাখা হয়েছে। কারণ গত অর্থবছরে শিয়ালদহ ডিভিশনে ৫৪টি ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: শেষ মুহূর্তে সিকিম সফর বাতিল! আলিপুরদুয়ারের কর্মসূচিতেও কোপ? আজ কী কী করবেন প্রধানমন্ত্রী
- সোনারপুর, বারাসাত, বনগাঁ, রানাঘাট ও ব্যারাকপুর-এ রেইন গেজ বসানো হয়েছে, যাতে বৃষ্টির পরিমাণ মাপা যায় এবং তদনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যায়। এছাড়াও নামখানা, ডায়মন্ড হারবার, কৃষ্ণনগর, ব্যারাকপুর, বারাসাত-সহ ৯টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে অ্যানিমোমিটার বসানো হয়েছে, যাতে বাতাসের গতি ও অভিমুখ নির্ধারণ করে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে দ্রুত উদ্ধার পরিকল্পনা নেওয়া যায়।
- জল চুঁইয়ে পড়া বা প্ল্যাটফর্মে জল জমে শর্ট সার্কিট বা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ২০৪টি স্টেশনের ছাউনি সঠিক অবস্থায় রাখতে বলা হয়েছে।
- এছাড়াও ১২৪টি লিমিটেড হাইট সাবওয়েতে পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পাম্পিং অ্যারেঞ্জমেন্ট নিশ্চিত করা হয়েছে। সংবেদনশীল LHS এলাকায় সেন্সর-ভিত্তিক জলজট পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা বসানো হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |